বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১৮ নম্বর কোর্টে ৪২০/৪০৬ ধারায় তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন এ্যাপোনিয়ার ফ্যাশনের এক্সিকিউটিভ মো. আমিনুল ইসলাম। সি. আর মামলা নম্বর ৯৬২/২০২৫।

মামলায় দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ চাওয়া হলে, ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত তিশার বিরুদ্ধে মামলাটি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থাকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এই ঘটনা নিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সলিমুল্লাহ সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, “তানজিন তিশার মতো তারকা একজন নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে যে ধরনের প্রতারণা করেছেন তা কাম্য নয়।

 উনি চাইলেই বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে মানহানিকর স্ট্যাটাস দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করেছেন। একজন নারী উদ্যোক্তাকে যেখানে উনার পেট্রোনাইজ করার কথা, সেখানে প্রতারণা করলেন। এ জন্য তাকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনি নোটিশের কোনো জবাব দেননি। তাই আমার মক্কেল তিশার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন।”

‘এ্যাপোনিয়া’ নামের একটা অনলাইন ফ্যাশন পেজ থেকে ২৮ হাজার ৮০০ টাকার একটা শাড়ি নিয়েছিলেন তিশা। কথা ছিল শাড়িটার টাকা না দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রমোশন করবেন নিজের ফেসবুক পেজে। কিন্তু তিশা তা করেননি, টাকাও দেননি। একপর্যায়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্যই প্রতারণার অভিযোগ আনেন ফ্যাশন পেজটির কর্ণধার।

ওই নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে তিশার ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও ভয়েস মেসেজের কথোপকথন চেক করে প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটা নিয়ে খবর ছড়িয়ে পড়লে সম্প্রতি তিশা তুমুল সমালোচনার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিশা তার ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করেন, “ওই শাড়িটি নাকি উপহার দিয়েছেন নারী উদ্যোক্তা।”

এরপর প্রতারণা, মানহানিকর কথা ও ছলচাতুরীর অভিযোগে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে তানজিন তিশাকে (তানজিন নাহার তিশা) আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন ‘এ্যাপোনিয়া’ অনলাইন ফ্যাশন পেজের কর্ণধার ঝিনুকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সলিমুল্লাহ সরকার। গত ২২ অক্টোবর তানজিন তিশার বাসার ঠিকানায় ডাকযোগে এবং তিশার হোয়াটসঅ্যাপে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে এ্যাপোনিয়া কর্তৃপক্ষ।

আইনি নোটিশে এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি ওই নারী উদ্যোক্তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচার করার জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয় তিশাকে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তিশা কোনো সমাধানে যাননি। উল্টো বলেছেন, “গিফট নিয়ে হয়ে গেলাম প্রতারক।”

ফ্যাশন পেজের কর্ণধার ঝিনুক গণমাধ্যমকে বলেন, “যে কোনো পেশাতেই একটা ইথিক্স থাকে। সেই অনুযায়ী কাজ না করলে পেশার সম্মান থাকে না। শিল্পীরা তো পানির মতো সহজ সরল হওয়ার কথা। তারা মানুষের জন্যই কাজ করেন। তাদেরকে মানুষ ফলো করেন। কিন্তু শিল্পী যদি এভাবে প্রতারণা করেন, মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করেন সেটা আসলে দুঃখজনক। যেহেতু বিষয়টি মামলায় গড়িয়েছে। আমি আইনের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আমার বিশ্বাস ন্যায় বিচার পাব।”
তিশা তার ক্যারিয়ারে দারুণ সময় পার করছেন। শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে বড় পর্দায় পা রাখতে যাচ্ছেন। ‘সোলজার’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করছেন সাকিব ফাহাদ।

 

news