ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, দেশটি এখন বহুমুখী নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জে জর্জরিত। শুক্রবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যুদ্ধ জিততে শুধু সেনা নয়—বিএসএফ, আইটিবিপি, সাইবার ও মহাকাশ সংস্থা, এমনকি সিভিল প্রশাসনের সমন্বয়ও জরুরি। এই মন্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ভেতরের টানাপোড়েন ও অনিশ্চয়তা।
এর আগে গত মাসে মধ্যপ্রদেশের মাউ–তে এক সেমিনারে বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রধানরা প্রকাশ্যে থিয়েটার কমান্ড নিয়ে আপত্তি তোলেন। বিমানবাহিনী জানায়, কোনো চাপের মুখে বাহিনীকে একক কমান্ডে আনা উচিত নয়। নৌবাহিনীও একই আশঙ্কা প্রকাশ করে। অর্থাৎ, তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এখন প্রকটভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
প্রতিরক্ষা শিল্প নিয়েও খোলাখুলি কথা বলেন জেনারেল দ্বিবেদী। তিনি স্বীকার করেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অর্থসংকট রয়েছে। এ কারণেই সামরিক সরঞ্জামের ওপর কর ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়েছে সরকার। তার দাবি, এতে আধুনিকীকরণ দ্রুত হবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কর-ছাড় আসলে ভারতের আর্থিক দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি।
ভবিষ্যতের যুদ্ধ প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ড্রোন ও ইউএভি হবে মূল অস্ত্র। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, ভারত এখনো এ খাতে যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারেনি। প্রতিপক্ষের উন্নত প্রযুক্তি দেশটির জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লাইন অব কন্ট্রোল নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দ্বিবেদী বলেন, “রাষ্ট্রপৃষ্ঠপোষক সন্ত্রাসবাদ কি বন্ধ হয়েছে? আমি মনে করি না।” তার এই বক্তব্যে পরিষ্কার বোঝা যায়, সীমান্ত অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাস দমনে ভারত এখনও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি।
সব মিলিয়ে সেনাপ্রধানের অকপট স্বীকারোক্তি ইঙ্গিত করছে—ভারত আজ বহুমুখী হুমকির মুখে এক আতঙ্কিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাহিনীর ঐক্যের বড় বুলি শোনা গেলেও বাস্তবে ভেতরের দুর্বলতা আর অস্থিরতাই এখন সামনে আসছে।
