ইতিহাস বারবার আমাদের শেখাতে চায়, কিন্তু শাসকেরা কি কখনো তা শিখে? শ্রীলঙ্কায় জমে থাকা ক্ষোভ একদিন বিস্ফোরিত হয়েছিল। রাজপাকসে পরিবার দেশ ছেড়ে পালায়, প্রেসিডেন্ট ভবন দখল, সাধারণ মানুষ সুইমিং পুলে সাঁতার, ঘরবাড়ি ধ্বংস—সবই ছিল দীর্ঘদিনের রোষের ফল।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনাও ইতিহাসের শিক্ষা নেওয়ার বদলে উল্টো পথ বেছে নেন। কোটা প্রথা বাতিলের দাবিকে উপেক্ষা করে তিনি জনমতের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। ছাত্রলীগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে আন্দোলন দমন চেষ্টা করা হয়। গুলি, হত্যাযজ্ঞ, দমন—সবই ঘটে, কিন্তু জনরোষ শেষ পর্যন্ত ঠেকানো যায়নি। ১৭ বছরের সঞ্চিত ক্ষোভ ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের পথে বাধ্য করে।

এবার নজর নেপালে। সেখানেও সরকারের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেনজি প্রজন্ম রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু সরকার প্রতিবাদের পরিবর্তে ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যম বন্ধের পথ বেছে নেয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতিহাস দেখায়—ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের মাধ্যমে বিদ্রোহ থামানো যায় না।

দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভের টেকটনিক প্লেট সরে বসছে। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ পেরিয়ে এবার নেপাল উত্তাল। বিশ্লেষকরা প্রশ্ন করছেন, এরপর কোথায়? অনেকেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন ভারতের দিকে। কাশ্মীর থেকে মণিপুর, সেভেন সিস্টারস থেকে পশ্চিমবঙ্গ—সবত্রই ক্ষোভের ছায়া।

মোদী প্রশাসনের ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ স্বপ্ন এই উত্তাপকে আরও উসকে দিচ্ছে। পাঞ্জাবের খালিস্তান আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন বিদ্রোহের আগুন ছড়াতে সময় লাগবে কি? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি সরকার জনমতের প্রতি নজর না দেয়, তবে ভারতেও বড় আন্দোলনের আগুন জ্বলতে পারে।
 

news