আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার চার বছর পরেও তালেবান সরকারকে কোনো দেশের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মেলেনি। তবুও ভারতের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো বাস্তবতা মেনে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। কারণ, তালেবান আজ পুরো আফগান ভূখণ্ড ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এই অবস্থা অস্বীকার করা সম্ভব নয়।
ভারত প্রথম তালেবান সরকারের সময় (১৯৯৬-২০০১) তাদের স্বীকৃতি দেয়নি এবং দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন তারা তালেবানকে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী হিসেবে দেখত। কিন্তু ২০২১ সালের পুনরাবৃত্তির পর থেকে ভারত যোগাযোগ বজায় রেখেছে এবং ২০২২ সালে কাবুলে দূতাবাস খুলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত বুঝেছে আফগানিস্তানে প্রভাব হারানো মানে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত অবস্থান দুর্বল হওয়া, যা পাকিস্তান ও অন্য শক্তির হাতে যেতে পারে।
পাকিস্তান একসময় তালেবানের মুখ্য সমর্থক হলেও, আজ তালেবানই ইসলামাবাদের জন্য বড় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তালেবানের সাথে জড়িত সশস্ত্র গোষ্ঠী পাকিস্তানে হামলা বৃদ্ধি করায় দুই দেশের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে।
ইরানও তালেবানকে স্বীকৃতি না দিলেও সীমান্ত ও জলবণ্টন নিয়ে উত্তেজনার পর সম্পর্ককে বাস্তবমুখী করে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
চীন তালেবানকে স্বীকৃতি না দিলেও আফগানিস্তানে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প এবং মাইনিং খাতে বিনিয়োগ ও প্রভাব বৃদ্ধির জন্য তালেবানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করছে।
সুতরাং, স্বীকৃতি না পেলেও তালেবান হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত কেন্দ্র, যা ভারত, পাকিস্তান, ইরান ও চীনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের জন্ম দিচ্ছে।


