মধ্যপ্রাচ্য—প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ও কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। এখানকার ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব এবং তেল নির্ভরতার কারণে এই অঞ্চলকে ঘিরেই ঘুরছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির চাকা। আর এই প্রেক্ষাপটেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি পরিণত হয়েছে একটি সুপরিকল্পিত কৌশলগত অবস্থানে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি—এটি আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ; তবে অনেক বিশ্লেষক একে দেখছেন আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবে। বর্তমানে বাহরাইন, কাতার, কুয়েত, ইরাক, জর্ডান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থায়ীভাবে সক্রিয়।
কোথায় কী ঘাঁটি ও তাদের ভূমিকা:
বাহরাইন: মার্কিন নৌবাহিনীর ৫ম বহরের সদরদপ্তর এখানে, যা উপসাগর ও লোহিত সাগরের নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান করে।
কাতার: আল-উদেইদ ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টকম-এর অগ্রবর্তী কেন্দ্র, যেখানে ১০,০০০ মার্কিন সৈন্য অবস্থান করে।
কুয়েত: ক্যাম্প আরিফজান, বুউরিং ও আলি আল সালেম বিমানঘাঁটি মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ইরাক: আইন আল-আসাদ ও এরবিল বিমানঘাঁটি প্রশিক্ষণ ও যৌথ অভিযানে ব্যবহৃত হয়।
ইউএই: আল ধাফরা বিমানঘাঁটি ও জাবেল আলি বন্দর গোয়েন্দা নজরদারি ও আইএসবিরোধী অভিযানে সহায়তা করে।
সৌদি আরব: প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ঘাঁটি।
জর্ডান: মুওয়াফাক আল সালতি ঘাঁটি থেকে লেভান্ত অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এই সামরিক ঘাঁটিগুলো কেবল যুদ্ধ নয়, বরং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, প্রশিক্ষণ এবং আঞ্চলিক শক্তি নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রশ্ন উঠছে—এটা কি শুধুই নিরাপত্তার জন্য, নাকি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রভাব বজায় রাখার গভীর কৌশল?


