প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ড শহরে সেনা পাঠাবেন। শহরটিকে তিনি বর্ণনা করেছেন “যুদ্ধবিধ্বস্ত” বলে। তাঁর দাবি, শহরটি অ্যান্টিফা ও দেশীয় সন্ত্রাসীদের দখলে চলে গেছে এবং সেখানে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) সুবিধাগুলো হুমকির মুখে রয়েছে।

ট্রাম্পের ঘোষণা

শনিবার এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ট্রাম্প লেখেন—
“হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোয়েমের অনুরোধে আমি যুদ্ধবিধ্বস্ত পোর্টল্যান্ডে সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি। অ্যান্টিফা এবং দেশীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণ থেকে ICE সুবিধাগুলোকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব শক্তি প্রয়োগ করা হবে। প্রয়োজনে আমি পূর্ণ শক্তি ব্যবহারেরও অনুমোদন দিয়েছি।”

তবে “পূর্ণ শক্তি” বলতে ট্রাম্প আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন এবং কোন ধরণের সেনা পাঠানো হবে—সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস কোনো অতিরিক্ত মন্তব্য করেনি।

কেন সেনা পাঠানো হচ্ছে?

ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে ICE সুবিধাগুলোতে সহিংস দাঙ্গা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর আক্রমণের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন—
“আমেরিকাকে নিরাপদ রাখতে আমাদের মিশনে অ্যান্টিফা সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে দেওয়া হবে না। যারা চেষ্টা করবে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।”

আগেও সেনা মোতায়েন করেছিলেন ট্রাম্প

এটি প্রথমবার নয়। এর আগে ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন। এছাড়া তিনি বাল্টিমোরশিকাগোসহ আরও কিছু ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন শহরে সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

এ পদক্ষেপে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মার্কিন সিনেটর জেফ মার্কলে, পোর্টল্যান্ডের মেয়র কিথ উইলসন, কংগ্রেসওম্যান ম্যাক্সিন ডেক্সটারসহ স্থানীয় নেতারা শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জনগণকে শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানান।

মার্কলে বলেন—
“রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্য হলো বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা, বিক্ষোভ উসকে দেওয়া। তাঁর লক্ষ্য পোর্টল্যান্ডকে সেইভাবে দেখানো, যেমনভাবে তিনি বর্ণনা করছেন। কিন্তু আমরা এই টোপ গিলব না।”

মেয়র উইলসন সরাসরি ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, “পোর্টল্যান্ডে সেনা পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই। সহিংসতা রাষ্ট্রপতি ছাড়া অন্য কেউ খুঁজে পাবে না।” তিনি আরও যোগ করেন—
“ভাবুন তো, সেনা পাঠানোর বদলে যদি শত শত প্রকৌশলী, শিক্ষক বা আউটরিচ কর্মী পাঠানো হতো, তাহলে শহরের আসল উন্নতি হতো।”

গভর্নরের ক্ষোভ

ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, সেনা মোতায়েন নিয়ে তাঁর অফিসকে কিছুই জানানো হয়নি। তিনি রাষ্ট্রপতির এই পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

news