ইতালির ক্যাথলিক চার্চে আবারও প্রকাশ পেয়েছে ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা। ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪,৪০০ জন ব্যক্তি দেশটির ধর্মগুরুদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে রেতে ল’আবুসো নামের সংগঠনের নতুন প্রতিবেদনে।

এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, যা ইতালির সবচেয়ে বড় চার্চ নির্যাতনের শিকারদের সংগঠনের অনানুষ্ঠানিক হিসাব।

ভয়াবহ বাস্তবতা প্রকাশ করলেন ভুক্তভোগীদের সংগঠন

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রান্সেস্কো জানার্দি জানান—এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে ভুক্তভোগীদের বিবৃতি, আদালতের নথি এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে।

বহু দশকের পুরনো কেলেঙ্কারি, তবুও নিরব চার্চ

বিশ্বব্যাপী শিশু নির্যাতনকারী ধর্মগুরুদের অপরাধ ও তা গোপন রাখার প্রচেষ্টা বহু বছর ধরে ক্যাথলিক চার্চের সুনামকে ধ্বংস করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতালির স্থানীয় গির্জা নেতারা এই সমস্যার মুখোমুখি হতে এখনো যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি।

 নতুন পোপের উদ্যোগ

নতুন পোপ লিও চলতি সপ্তাহে প্রথমবারের মতো নির্যাতনের শিকারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
তিনি চার্চের নতুন বিশপদের উদ্দেশে বলেন—

“ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ গোপন না করে সত্য প্রকাশ করুন।”

এর আগে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস, যিনি ১২ বছর পোপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, এই ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তবে তাতে প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসেনি।

 বিস্তারিত পরিসংখ্যান: অপরাধের চিত্র আরও ভয়াবহ

রেতে ল’আবুসো জানিয়েছে, তারা ১,২৫০টি সন্দেহভাজন নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যার মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে একাধিক ভুক্তভোগী রয়েছেন।
এই ঘটনাগুলোর মধ্যে ১,১০৬টি পুরোহিতদের বিরুদ্ধে, আর বাকিগুলো সংঘটিত করেছে নান, ধর্মীয় শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষাবিদ ও স্কাউট সদস্যরা।

মোট ৪,৬২৫টি ভুক্তভোগী বা বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির মামলা নথিভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪,৩৯৫ জন পুরোহিতদের হাতে নির্যাতনের শিকার।

এর মধ্যে ৪,৪৫১ জনের বয়স ছিল ১৮ বছরের নিচে, এবং ৪,১০৮ জন ছিলেন পুরুষ।
এছাড়া নির্যাতনের তালিকায় আছেন ৫ জন সন্ন্যাসিনী, ১৫৬ জন দুর্বল প্রাপ্তবয়স্ক ও ১১ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।

 

news