ভারতের মহারাষ্ট্রের সাতারায় এক নারী চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। তার অভিযোগ, গত পাঁচ মাসে এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে চারবার ধর্ষণ করেছেন। অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর এসআই গোপাল বাদনেকে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে সাতারা জেলা হাসপাতালে ওই নারী চিকিৎসক আত্মহত্যা করেন। তার বাম হাতের তালুতে তিনি লিখেছেন, ‘পুলিশ ইন্সপেক্টর গোপাল বাদনেই আমার মৃত্যুর কারণ। সে আমাকে চারবার ধর্ষণ করেছে এবং দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে।’ চিরকুটে তিনি আরেক কর্মকর্তা প্রশান্ত বাঙ্কারের বিরুদ্ধেও মানসিক হয়রানির অভিযোগ করেন।
কেন অভিযোগের পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?
ভুক্তভোগী চিকিৎসক এর আগে গত ১৯ জুন স্থানীয় ডেপুটি পুলিশ সুপার ডিএসপিএর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছিলেন। চিঠিতে তিনি বাদনে, সাব-ডিভিশনাল পুলিশ ইন্সপেক্টর পাতিল ও সহকারী ইন্সপেক্টর লাডপুত্রের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সূত্র জানায়, মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নির্দেশে বাদনেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনায় রাজ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কংগ্রেস নেতা বিজয় নামদেবরাও ওয়াদেত্তিওয়ার বলেন, "যখন রক্ষকই শিকারী হয়ে ওঠে, তখন ন্যায়বিচার কোথায়? আগে অভিযোগ জানানো হলেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?" যারা অভিযুক্তদের চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত ও অভিযোগ উপেক্ষা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তদন্ত শুরু: এক অভিযুক্ত পলাতক
এদিকে ক্ষমতাসীন বিজেপির নারী নেত্রী চিত্রা ওয়াঘ বলেন, "প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন এফআইআর নথিভুক্তের কাজ চলছে। এক অভিযুক্ত সাতারার বাইরে অবস্থান করছেন, তাকে গ্রেপ্তারে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "নারীরা যেন এই ধরনের ঘটনায় চরম পদক্ষেপ না নেন, বরং ১১২ হেল্পলাইন ব্যবহার করে অভিযোগ জানান। সরকার সহায়তা করতে প্রস্তুত।"
জোটসঙ্গী এনসিপির নেতা আনন্দ পরাঞ্জপে বলেন, "এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। নারীর প্রতি নির্যাতনে শূন্য সহনশীলতার নীতিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।"
এদিকে মহারাষ্ট্র রাজ্য মহিলা কমিশনও ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। তারা সাতারার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে—আগের অভিযোগে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
