পর্তুগালে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকারের প্রস্তাবিত শ্রম আইন সংস্কারের বিরুদ্ধে গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানী লিসবনের রাস্তায় প্রায় এক লাখ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, এই সংস্কার কার্যকর হলে শ্রমিকদের অধিকার মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সরকার যে সংস্কার প্রস্তাব এনেছে তাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ধারা। যেমন: নিয়োগদাতাদের জন্য কর্মী ছাঁটাই করা আরও সহজ করা, আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ বাড়ানো এবং কিছু বিশেষ ধরনের ছুটি সীমিত করা। এর মধ্যে গর্ভপাতের পর নারীদের মানসিকভাবে সুস্থ হওয়ার জন্য যে ছুটি, তাকে কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবটি বিশেষভাবে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই পদক্ষেপগুলো কর্মক্ষেত্রে নমনীয়তা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াবে, যা পশ্চিম ইউরোপের তুলনায় দরিদ্র দেশ পর্তুগালের অর্থনীতির জন্য খুবই জরুরি। ধারণা করা হচ্ছে, সংসদে ডানপন্থি চেগা দলের সমর্থন পেলে এই বিলটি পাস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
কিন্তু পর্তুগালের সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন সিজিটিপি-এর নেতারা এই প্রস্তাবকে ‘শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় আক্রমণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সিজিটিপি জানিয়েছে, শনিবারের বিক্ষোভে লিসবনের প্রধান সড়কগুলো প্রায় এক লাখ মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ইউনিয়ন নেতা তিয়াগো অলিভেইরা সাংবাদিকদের বলেন, "এই পরিবর্তনগুলো কার্যকর হলে তা আমাদের সবার জীবনযাত্রার মানই নামিয়ে দেবে।"
বিক্ষোভকারীরা তাদের কাজের পরিবেশের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার পাশাপাশি বেতন বৃদ্ধির দাবিও জোরেশোরে তুলে ধরেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পর্তুগালের অর্ধেকের বেশি শ্রমিকের মাসিক আয় ছিল এক হাজার ইউরোরও কম, যা জীবনযাপনের বর্ধিত ব্যয়ভারের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।
এই প্রস্তাবিত বিলের বিরুদ্ধে সিজিটিপি তাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং আগামী ১১ ডিসেম্বর দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
