মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টার মাঝেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন কড়া বার্তা দিয়ে দিয়েছেন। বুধবার এক ভাষণে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, ইউক্রেনের যে ভূখণ্ডগুলো রাশিয়া দাবি করে আসছে, তা ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কোনও আপস করবেন না। পুটিনের এই মন্তব্য শান্তি আলোচনার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যখন মার্কিন ও ইউরোপীয় নেতারা শান্তি চুক্তি নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক চেষ্টা চালাচ্ছেন, ঠিক তখনই ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্রদের উপর কঠোর সমালোচনার ঝড় তুললেন পুটিন। তার হুঁশিয়ারি, প্রয়োজনে রাশিয়া সামরিক শক্তির মাধ্যমেই ঐতিহাসিক অঞ্চলগুলো দখল করবে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে পুটিন প্রথমে কূটনীতির প্রতি আগ্রহ দেখান। তিনি বলেন, "আমরা এই সংকটের সমাধান ও যুদ্ধের মূল কারণ দূর করতে আলোচনার মাধ্যমেই আগ্রহী।"
কিন্তু সাথে সাথেই শর্ত দিয়ে তিনি বলেন, "কিন্তু বিরোধী পক্ষ এবং তাদের বিদেশি পৃষ্ঠপোষকরা যদি আলোচনায় বসতে অস্বীকার করে, তাহলে রাশিয়া সামরিক পথেই তার ঐতিহাসিক ভূমি পুনরুদ্ধার করবে।"
পুটিনের 'ঐতিহাসিক ভূমি' বলতে বোঝানো হচ্ছে সেই সব এলাকা, যেগুলো রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে দাবি করে আসছে। শান্তি আলোচনায় এই ভূখণ্ডগত প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অমীমাংসিত প্রশ্নের পাশাপাশি, ভবিষ্যতে ইউক্রেন কতটা নিরাপদ থাকবে—সেটা নিয়ে বোঝাপড়া করাও এখন শান্তি আলোচনার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। এই বিতর্কের মধ্যে ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক বিরোধী স্বার্থগুলো আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এখন রাশিয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে, তবে পুরো এলাকা এখনও তার নিয়ন্ত্রণে আসেনি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংঘাত পর্যবেক্ষক সংস্থা 'ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার' তাদের বিশ্লেষণে বলছে, যদি যুদ্ধ এখনকার মতোই চলতে থাকে, তাহলে পুরো দনবাস দখল করতে রাশিয়ার ২০২৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
