ভেনেজুয়েলার সাথে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে ওঠার মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরে ফের মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি অপারেশনে চারজন নিহত হয়েছেন। ওয়াশিংটনের কারাকাস ঘিরে সামরিক তৎপরতা সীমিত করার কংগ্রেসের একটি প্রস্তাব ভোটে হারার পরপরই এই হামলার খবর পাওয়া গেছে।

লাতিন আমেরিকায় ‘সাউদার্ন স্পিয়ার’ নামক সামরিক অভিযানের দায়িত্বে থাকা ইউএস সাউদার্ন কমান্ড বুধবার ১৭ ডিসেম্বরের এই হামলার কথা নিশ্চিত করে। তারা জানায়, হামলায় ‘চারজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। তবে, ধ্বংসপ্রাপ্ত নৌযানটি সত্যিই মাদক পাচারের সাথে জড়িত ছিল কি না, সে ব্যাপারে কোন প্রমাণ তারা প্রকাশ করেনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে ‘সাউদার্ন স্পিয়ার’ জানায়, নৌযানটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের একটি পরিচিত মাদক পাচার রুটে চলছিল এবং মাদক চালান নিয়ে যাচ্ছিল বলে সন্দেহ ছিল। পোস্টের সাথে প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় একটি দ্রুতগতির নৌকা কীভাবে আক্রান্ত ও ধ্বংস হয়ে যায়।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের নির্দেশে পরিচালিত এই সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে মোট ২৬টি নৌযানে হামলা চালানো হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এসব একতরফা হামলাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করছেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবেশ বন্ধ করতে এই অপারেশনগুলো অত্যন্ত জরুরি।

অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সরকারকে উৎখাত করে দেশটিকে একটি উপনিবেশে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে। ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক হুমকি ও তেল অবরোধের নীতিকে তিনি ‘বর্বর কূটনীতি’ বলে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

স্থানীয় সময় ১৭ ডিসেম্বর টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মাদুরো বলেন, ওয়াশিংটন কারাকাসে একটি ‘পুতুল সরকার’ বসাতে চাইছে যা ‘৪৭ ঘণ্টাও টিকবে না’। ট্রাম্প প্রশাসনের ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ সৃষ্টিকে তিনি ‘যুদ্ধবাজি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন যে, ওয়াশিংটনের আসল উদ্দেশ্য হলো ভেনেজুয়েলার সংবিধান, সার্বভৌমত্ব এবং দেশটির বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ নিজেদের আয়ত্তে নেওয়া।

 

news