'দেশের বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই। দেশই হলো আমার ঠিকানা। এই দেশ, এই দেশের মাটি ও মানুষই আমার সবকিছু।'—২০১৫ সালে লন্ডনের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এই অমোঘ কথাগুলো বলেছিলেন।

কিন্তু কেন বলেছিলেন তিনি এমন কথা?

কারণটা ছিল তৎকালীন এক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যখন 'মাইনাস টু' ফর্মুলা কার্যকর করার চেষ্টা চলছিল, তখন তাকে দেশ ছাড়ার জন্য জোর চাপ দেওয়া হয়। সে সময়ের সরকার তাকে সপরিবারে বিদেশে পাঠানোর সব ব্যবস্থাই চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু সেই সময়ের বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া দৃঢ় কণ্ঠে বলে দিয়েছিলেন, 'বিদেশে আমার কোনো ঠিকানা নেই। মরলে এ দেশের মাটিতেই মরব।'

কণ্টকাকীর্ণ পথে রাজনীতিতে আসা
১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার পদার্পণ মোটেও সহজ ছিল না। ১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৯১ সালে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়া— এই লম্বা পথচলার প্রতিটি ধাপে তার প্রধান শক্তি ছিল জনগণের অকুণ্ঠ আস্থা ও ভালোবাসা।

আজ সেই দেশের মাটিতেই শেষ নিঃশ্বাস
আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি তার সেই অঙ্গীকারই রক্ষা করলেন— বিদেশে নয়, এই দেশের মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন।

 

news