ওয়াসিম জাফর এবং মাইকেল ভনের মধ্যে বহু পুরোনো মজার প্রতিদ্বন্দ্বিতা আবারও সোশ্যাল মিডিয়াকে দখল করেছে, আর এবার যেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়কই বড় আঘাতটি হানলেন!
তাঁদের এই হালকা চালের ঠাট্টা-তামাশা চলছে বছরের পর বছর ধরে। সাধারণত ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল যখন হারে, তখন জাফর মজা করে ভনকে খোঁচা দেন, আর ভারত পা ফসকালেই ভন সেই সুযোগটি লুফে নেন।
সম্প্রতি, অ্যাশেজ ২০২৫-২৬-এর প্রথম টেস্টে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ইংল্যান্ড দুই দিনেই বিধ্বস্ত হওয়ার পর ভারতের সাবেক এই ব্যাটার মাইকেল ভনকে নিয়ে ট্রোল করেছিলেন।
জাফর বলিউড ক্ল্যাসিক 'কাভি খুশি কভি গম.সিনেমার শাহরুখ খান ও কাজলের একটি জনপ্রিয় মিম শেয়ার করে ভনকে ট্যাগ করেছিলেন। সেই পোস্টটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছিল।
কিন্তু এবার খেলার টেবিল ঘুরে গেছে, এবং ভন এই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। গুয়াহাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশাল ৪৮৯ রানের জবাবে ভারত তাদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২০১ রানে গুটিয়ে যাওয়ায়, ভন জাফরকে উপহাস করার সুযোগটি কাজে লাগালেন।
গুয়াহাটিতে তৃতীয় দিনের শেষে ভারত ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২৮৮ রানের বিশাল লিড তুলে দিয়েছে, আর এটাই ছিল ভনের পাল্টা জবাব দেওয়ার সেরা মঞ্চ। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন মজার ছলে ভারতের এই পতনের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে বাঁহাতি পেসার মারকো জানসেনকে ইঙ্গিত করেন।
উল্লেখ্য, মারকো জানসেনের বিধ্বংসী বোলিং স্পেলে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। জানসেন মাত্র ৪৮ রান খরচ করে ছয়টি উইকেট তুলে নেন, যা ভারতের মিডল ও লোয়ার অর্ডারকে পুরোপুরি বিধ্বস্ত করে দেয়।
জানসেনের শিকার হওয়া ব্যাটারদের মধ্যে ছিলেন ধ্রুব জুরেল ০, অধিনায়ক ঋষভ পন্ত ৭, রবীন্দ্র জাদেজা ৬, নীতিশ রেড্ডি ১০, কুলদীপ যাদব ১৯ এবং জসপ্রিত বুমরাহ ৫।
জানসেনের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার সাইমন হার্মার ৬৪ রানের বিনিময়ে আরও তিনটি উইকেট নিয়ে চাপ বাড়ান। ফলে স্বাগতিক ভারত চলমান ফাইনাল টেস্টে কোনো লড়াই-ই করতে পারেনি।
ভারতের মাটিতে বিরল কীর্তি
মারকো জানসেন ভারতের মাটিতে সফরকারী কোনো ফাস্ট বোলারের করা অন্যতম মারাত্মক স্পেল উপহার দিলেন। এই তরুণ অলরাউন্ডার একাই যেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভারতের মাটিতে একটি বিরল টেস্ট সিরিজ জয়ের দোরগোড়ায় টেনে এনেছেন। এক পর্যায়ে ভারতকে শক্তিশালী মনে হলেও এভাবে ভেঙে পড়াটা ছিল রীতিমতো বেদনাদায়ক।
এক উইকেটে ৯৫ রান থাকা অবস্থায় ভারতীয় ইনিংস স্থিতিশীল ও নিয়ন্ত্রিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু জানসেন তাঁর দ্বিতীয় স্পেলে ফিরতেই সবকিছু পাল্টে যায়। সেই মুহূর্ত থেকে ভারত নাটকীয়ভাবে ভেঙে পড়ে, মাত্র ২৭ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট হারায়। ভারতের টেস্ট সিরিজ সমতায় আনার সব আশা যেন এক নিমিষে উধাও হয়ে গেল।
জানসেন শর্ট বলকে যেন অস্ত্রের মতো ব্যবহার করেছেন, একের পর এক ব্যাটারকে কুপোকাত করেছেন। তিনি শুধু বাউন্সার দিয়েই চারটি উইকেট নিয়েছেন, যা ভারতের মাটিতে একটি বিরল অর্জন। কারণ, ভারতের পিচ সাধারণত স্পিন এবং ধীর গতির পক্ষে থাকে। আসলে, এর আগে কোনো বোলারই ভারতের মাটিতে এক ইনিংসে এতগুলো উইকেট বাউন্সার দিয়ে নিতে পারেননি।
