দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫১ রানের বড় হার। ব্যাটিং-বোলিং সব বিভাগেই ভরাডুবি। কিন্তু সবচেয়ে বড় চিন্তার নাম জসপ্রীত বুমরাহ! প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটার মোহাম্মদ ক্যাফ সরাসরি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বুমরাহর ইয়র্কার বলগুলো যেখানে ফেলা উচিত ছিল, সেখানে সেগুলো ফুল টস হয়ে যাচ্ছে। আর এই ত্রুটি মূল্য দিতে হয়েছে ছক্কা খেয়ে।
গত ১১ ডিসেম্বর মুলানপুরে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট করে ২১৩ রানের বড় সংগ্রহ তোলে। জবাবে ১৬২ রানে অল-আউট হয়ে যায় ভারত। এই হার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ক্যাফ বুমরাহর বোলিংকেই দায়ী করেছেন। ভারতের এই পেস স্টারের চার ওভারে খরচ হয়েছিল ৪৫ রান।
ইয়র্কারই হল মূল সমস্যা:
ক্যাফের মতে, বুমরাহ যেসব ইয়র্কার বল করতে চেয়েছিলেন, সেগুলো বারবার ফুল টস হয়ে গেছে মুলানপুরের ম্যাচে। এই ভুলগুলো খুবই ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সেই ফুল টস বলগুলোই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা সহজেই ছক্কা মেরেছেন। এমনকি ডোনোভান ফেরেইরার মতো নতুন ব্যাটাররাও বুমরাহকে আত্মবিশ্বাসের সাথে মোকাবিলা করতে পেরেছেন।
ক্যাফ তার ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা এক ভিডিওতে স্পষ্ট বলেন, "দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন ব্যাটাররাও, যেমন ডোনোভান ফেরেইরা, যাদের তেমন বড় সুনাম নেই, তারাও তাকে মারছিলেন। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন ব্যাটার তাকে প্রভাবিত করেছে। ভালো ডেলিভারিতে যদি কেউ ছক্কা মারে তাতে সমস্যা নেই, সেটা ঘটবেই। কিন্তু সমস্যা হলো, তিনি যেসব বল করতে চান সেগুলো সঠিক জায়গায় পড়ছে না। এই মুহূর্তে বুমরাহর বোলিং নিয়ে এটাই বড় প্রশ্ন।"
বিশ্বকাপের আগে বড় চিন্তা:
২০২৬ আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ মাত্র কয়েক মাস দূরে। আর টুর্নামেন্টের আগে ভারতের খেলা মাত্র ৮টি টি২০আই। এই পরিস্থিতিতে বুমরাহর উপর নিয়ন্ত্রণের এই অভাব ক্যাফকে চিন্তিত করেছে। তিনি স্বীকার করেন বুমরাহ একজন দারুণ বোলার, কিন্তু একটি ম্যাচে তাঁকে এতবার ইয়র্কার মিস করতে খুব কমই দেখা গেছে।
ক্যাফ আরো যোগ করেন, "আমি হতাশ বোধ করেছি। আর এটা চিন্তার কারণ, কারণ আর এক মাসের মধ্যেই বিশ্বকাপ আসছে। তিনি যেসব বল ইয়র্কার করতে চেয়েছেন, তার মধ্যে ছয়-সাতটি বলই ফুল টসে পরিণত হয়েছে। কিছু ফুল টস সরাসরি ছক্কা গেছে। আমার মতে, গতকাল তিনি যেভাবে বোলিং করে ইয়র্কার মিস করেছেন, সেটা একটা উদ্বেগের বিষয়। তিনি মহান বোলার, কিন্তু তাঁকে এত ভুল করতে আমি কখনো দেখিনি।"
২০২৫ সালে বুমরাহর পরিসংখ্যান:
এই বছর এখন পর্যন্ত বুমরাহ খেলেছেন ১২টি টি২০আই। ১০ ইনিংসে নিয়েছেন ১২টি উইকেট। তাঁর গড় ২৩, স্ট্রাইক রেট ১৮.৫ এবং ইকোনমি রেট ৭.৪২। এই পরিসংখ্যানগুলো মোটামুটি ভালো হলেও, বুমরাহর জন্য যেসব 'ইমপ্যাক্ট' আশা করা হয়, তা এর মধ্যে পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি। বিশ্বকাপের দোরগোড়ায় ভারতের প্রধান অস্ত্রের এই হোঁচট নিঃসন্দেহে বড় চিন্তার কারণ।
