দিল্লি হাইকোর্ট ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকরের ব্যক্তিত্ব ও প্রচার অধিকার রক্ষায় বড় পদক্ষেপ নিল। কোর্ট গুগল, মেটা, এক্স-সহ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে – গাভাসকরের অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সম্প্রতি গাভাসকর নিজের নাম, ছবি, চেহারা আর ব্যক্তিত্ব অবৈধভাবে সোশ্যাল মিডিয়া আর ই-কমার্স সাইটে ব্যবহার হচ্ছে দেখে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেন।
পড়ুনও: রোহিত শর্মা নিউজিল্যান্ড ওয়ানডের আগে এই টুর্নামেন্টে খেলবেন
গাভাসকর শুধু চেয়েছিলেন তার ব্যক্তিত্বের অধিকার রক্ষা পাক এবং অবৈধ ব্যবহার বন্ধ হোক। দিল্লি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে – অভিযুক্তদের বেসিক সাবস্ক্রাইবার ইনফরমেশন (বিএসআই) আর আইপি ডিটেইলস দিতে হবে প্ল্যাটফর্মগুলোকে।
কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে: ডিফেন্ডেন্ট ৭, ১০ আর ১১ (ইন্টারমিডিয়ারি) অভিযোগকে ফর্মাল কমপ্লেইন্ট হিসেবে নিয়ে তার অধিকার লঙ্ঘনকারী কনটেন্ট ৭ দিনের মধ্যে সরাতে হবে। জাস্টিস মনমিত প্রিতম সিং অরোরা জোর দিয়ে বলেছেন, কোর্টে আসার আগে প্ল্যাটফর্মগুলোর কাছে সরাসরি অভিযোগ করা উচিত।
মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ ডিসেম্বর। গাভাসকরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে – ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার আইনজীবীর মাধ্যমে যে লিঙ্কগুলো সরাতে চান, তার ইউআরএল জমা দিতে হবে। গুগল, মেটা, এক্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোকে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দিল্লি হাইকোর্ট প্ল্যাটফর্মগুলোকে তাড়াতাড়ি অ্যাকশনের নির্দেশ দিল গাভাসকরের অভিযোগে
কোর্ট আরও বলেছে, লিঙ্ক নিয়ে যদি প্ল্যাটফর্মগুলোর কোনো আপত্তি বা সন্দেহ থাকে, তাহলে গাভাসকরকে তাড়াতাড়ি জানাতে হবে।
এএনআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জাস্টিস মনমিত প্রিতম সিং অরোরা বলেছেন, “তাদের অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে দিন। আমি বুঝতে পারছি না কেন পক্ষগুলো প্রতিরোধ করছে বা কেন তারা সেই মেকানিজম ব্যবহার করছে না।”
কোর্ট জানিয়েছে, ইন্টারমিডিয়ারিদের গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল সিস্টেম অভিযোগের বেশিরভাগ সমাধান করতে পারে। জাস্টিস অরোরা যোগ করেন, “তাহলে কোর্ট অবশিষ্ট বিষয়গুলো ভালোভাবে বিচার করতে পারবে, অন্ধকারে তীর ছোড়ার চেয়ে।”
জাসপ্রিত বুমরাহর পতন শুরু হয়েছে কি? সাবেক ভারতীয় ব্যাটারের শিহরণ জাগানো সতর্কতা
কোর্ট এআই ডিপফেক আর আইডেন্টিটি মিসইউজ নিয়ে সতর্কতা দিল গাভাসকরের মামলায়
গাভাসকরের হয়ে সিনিয়র অ্যাডভোকেট গোপাল জৈন কোর্টকে জানিয়েছেন, কিংবদন্তি ব্যাটার তার ব্যক্তিত্ব আর প্রচার অধিকার রক্ষায় মামলা করেছেন। অনলাইনে তার নাম-পরিচয় জাল কনটেন্টে ব্যবহার হচ্ছে।
এর মধ্যে আছে জাল বক্তব্য – গৌতম গম্ভীর আর অন্য ক্রিকেটারদের সমালোচনা করছেন বলে দেখানো হচ্ছে, এমনকি ভিরাট কোহলি নিয়েও বানোয়াট মন্তব্য।
কোর্ট প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে – এআই ডিপফেক, ভয়েস ক্লোনিং, জাল ভিজ্যুয়াল আর অনুমতি ছাড়া ডিজিটাল পণ্য বিক্রি। এসব ব্যক্তির প্রচার অধিকার, মর্যাদা আর গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ করে।
তবে দিল্লি হাইকোর্ট স্পষ্ট করেছে – সত্যিকারের স্যাটায়ার, সৃজনশীল কাজ, সংবাদ রিপোর্টিং আর কমেন্ট্রি বন্ধ করা যাবে না।
