অ্যাশেজ সিরিজে পিছিয়ে পড়া ইংল্যান্ড দলের ওপর মিডিয়ার চাপ তুঙ্গে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই বিমানবন্দরে ঘটলো অপ্রীতিকর এক ঘটনা। দলের নিরাপত্তা কর্মী এক অস্ট্রেলিয়ান টিভি ক্যামেরাম্যানকে ধাক্কা দেন, যা ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অ্যাশেজ ২০২৫-২৬ সিরিজের তৃতীয় টেস্টের আগে ব্রিসবেন বিমানবন্দরে ইংল্যান্ড দলের এক নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে 'চ্যানেল ৭'-এর এক ক্যামেরা অপারেটরের সংঘর্ষ হয়। ক্রমবর্ধমান সমালোচনা ও মিডিয়া চাপের মধ্যে দলটি ব্রিসবেন থেকে অ্যাডিলেডের উদ্দেশে রওনা হচ্ছিল, তখন এই ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা কর্মী খেলোয়াড়দের আড়াল করতে গিয়ে ক্যামেরাম্যানকে হাত দিয়ে ধাক্কা দেন।
বেন স্টোকসের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দল পার্থ ও ব্রিসবেনে প্রথম দুই টেস্ট হেরে ০-২ তে পিছিয়ে। সিরিজে টিকে থাকতে পরের ম্যাচ জিততেই হবে তাদের। শনিবার দলটি অ্যাডিলেডের উদ্দেশে ব্রিসবেন ত্যাগ করে। এরই মধ্যে বিমানবন্দরে ঘটে এই অপ্রীতিকর মুহূর্ত।
কী ঘটেছিল?
ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা একটি ছোট বিরতির পর নুসা থেকে ব্রিসবেন বিমানবন্দরে পৌঁছালে চ্যানেল ৭-এর ক্যামেরাম্যান দলের ফুটেজ তুলতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু এক নিরাপত্তা কর্মী মাঝে পড়ে তাকে শারীরিকভাবে ধাক্কা দিয়ে পিছিয়ে দেন।
ঘটনাটি ঘটে তখন, যখন ইংল্যান্ড দল তৃতীয় টেস্টের জন্য অ্যাডিলেডগামী ফ্লাইটের দিকে হেঁটে যাচ্ছিল। সেই সময় তোলা ছবিতে দেখা গেছে, নিরাপত্তাকর্মী তার হাত বাড়িয়ে ক্যামেরাম্যানের সাথে শারীরিক যোগাযোগ করছেন, যদিও ক্যামেরাম্যানটি শালীন দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন বলে মনে হচ্ছিল।
চ্যানেল ৭-এর ওই কর্মী নিরাপত্তা কর্মীর প্রতিক্রিয়ায় বিস্মিত হন। তিনি জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে ছিলেন বললেও, নিরাপত্তা কর্মী বারবার তার দৃষ্টিসীমা আটকে দেন। এমনকি নিরাপত্তা কর্মী বলেও ওঠেন, "আমার মুখের সামনে থেকে সরে যাও... চালাকি করো না।"
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব নির্দেশনা:
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে অ্যাশেজ চলাকালীন মিডিয়া আচরণ সম্পর্কে স্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ব্রডকাস্টারদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, ভ্রমণের সময় উভয় দলের খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত জায়গা দিতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাতায়াতের সময় কোনও সাক্ষাৎকার নেয়া যাবে না এবং বিমানবন্দর বা হোটেলের কোনও ফুটেজই শালীন দূরত্ব থেকে তুলতে হবে।
দুই হার চাপ আরও বাড়িয়েছে:
প্রথম দুই টেস্ট হারের পর ইংল্যান্ডের ওপর মিডিয়া চাপ অনেক বেড়েছে, আর এই চাপ আরও বেড়েছে যখন তারা সিরিজে টিকে থাকার জন্য জয় দরকার অবস্থায় অ্যাডিলেড যাচ্ছে।
এই ঘটনার আগেও প্রতিবেদক ও ভক্তদের আনাগোনায় জর্জরিত হচ্ছিল ইংল্যান্ড দল। দলটি তাদের নিরাপত্তা কর্মীদের শান্ত থাকতে এবং বাড়তি প্রতিক্রিয়া না দেখাতে বলেছিল, কারণ তাদের দেখা বেশিরভাগ মানুষই শুধু সেলফি বা দ্রুত ছবি তুলতে চায়।
অস্ট্রেলিয়ায়, খেলোয়াড়রা এই অতিরিক্ত মনোযোগ মজা নিয়েই সামলে নিয়েছিল। তারা গল্ফ সেশনে ফিল্মিং করতে দিয়েছে, তাদের উপর দিয়ে ড্রোন উড়ানো নিয়ে হাসাহাসি করেছে, এমনকি ই-স্কুটারে হেলমেট না পড়ার গল্পকেও হালকাভাবে নিয়েছে। তারা নুসার সৈকতে স্থানীয় রেডিও হোস্টদের সাথে ছবি তোলা এবং মজাও করেছে।
তবে, দুটি বড় হার দলের চারপাশের মেজাজ বদলে দিয়েছে। বিমানবন্দরের এই সংঘর্ষ ছিল উত্তেজনার প্রথম স্পষ্ট লক্ষণ, যা দেখাচ্ছে খারাপ ফলাফলের চাপ ইংল্যান্ড দলের চারপাশের সাধারণত স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশকে কীভাবে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে।
