শরণার্থী শিবির থেকে বিশ্বমঞ্চের সেরা তারকা ফুটবলার

বয়সটা এখন ৩৭ বছর। তবে ফুটবলের মাঠে লুকা মদ্রিচকে দেখলে অনেকেই এটা বিশ্বাস করতে চাইবেন না। এক পলকের দেখায় যে কেউ বলেই উঠবেন এ যেন মাত্র ২৫ বছরের এক তরুণ। মাঝমাঠ দাপিয়ে বেড়ানো এই ফুটবলারের গোল করানোর পাশাপাশি রয়েছে গোল করার নিখুঁত দক্ষতা।

মদ্রিচ ১৯৮৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ক্রোয়েশিয়ার জাদারে জন্মগ্রহণ করেছেন। শহরের ভেলেবিট পর্বতের দক্ষিণে জাতোন ওব্রোভাচকি গ্রামে তার শৈশব কেটেছে। তার বাবা স্ত্রিপে মদ্রিচ ও মা রাদোইকা দোপুদ, তারা উভয়ই নিটওয়্যার কারখানায় কর্মরত ছিলেন।

মদ্রিচের শৈশবে ক্রোয়েশিয়ায় স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। যুদ্ধ বেড়ে গেলে তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। শরণার্থী হিসেবে সাত বছর হোটেল কোলভারেতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেছেন মদ্রিচ। পরে জাদারের হোটেল ইজে স্থানান্তরিত হন তারা।

চলতি মৌসুমের লা লিগায় লুকা মদ্রিচ ১৩ ম্যাচে ৫ গোলে সরাসরি অবদান রেখেছেন। এরপর মধ্যে করেছেন ৩টি আর অ্যাসিস্ট দুটি। স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তির সেরা পছন্দ এই ক্রোয়াট। এই বয়সেও মাঠ মাতিয়ে ম্যাচের ব্যবধান গড়তে অবদান রাখছেন।

রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল খেলেছিল, যা বিশ্বমঞ্চে ক্রোয়েশিয়ার সেরা সাফল্য। দলের এমন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন লুকা। দারুণ ফুটবল প্রদর্শনে নির্বাচিত হয়েছিলেন গোল্ডেন বল বিজয়ী। মরুর বুকে প্রথম বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া দল এবারও লুকা মদ্রিচের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপে নাইজেরিয়া, আর্জেন্টিনা ও আইসল্যান্ডকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েই শেষ ১৬-তে পা রেখেছিল ক্রোয়েশিয়া। এরপর ক্রমেই ফাইনালে পৌঁছায় দলটি। তবে ফাইনালে দুর্ভাগ্যক্রমে ফ্রান্সের সঙ্গে হেরে যায় ক্রোয়েটরা।

২০০৬ সাল থেকে বিশ্বমঞ্চে খেলছেন মদ্রিচ। ধারণা করা হচ্ছে, মরুর বুকেই মদ্রিচের শেষ বিশ্বকাপ। বেশ কিছুদিন আগে ফিফার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে এমনটাই ইঙ্গিত করেছিলেন এই মিডফিল্ডার।

ক্রোয়েশিয়ার হয়ে লুকা ১৫৪টি ম্যাচে খেলেছেন। করেছেন ২৩ গোল। মদ্রিচ ২০১৮ সালে জেতেন ব্যালন ডি’অর। ফুটবল ক্যারিয়ারে মদ্রিচ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা, কোপা দেল দে, স্প্যানিশ সুপার কাপ, উয়েফা সুপার কাপ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা অর্জন করেছেন।

এনবিএস/ওডে/সি

news