সূর্যের উদ্দেশে যাত্রা করল ভারতীয় নভোযান আদিত্য-এল ১

চাঁদে নভোযান পাঠানোর দুই সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই সূর্যের কক্ষপথে নতুন নভোযান আদিত্য-এল ১ পাঠাল ভারত। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা করে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এ নভোযান।

সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ১৪ কোটি ৯৬ লাখ কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে উড়াল দেওয়ার পর ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে আদিত্য-এল ১। শতকরা হিসেবে যা পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের মাত্র ১ শতাংশ পথ। এই মিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরো। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই পথ পাড়ি দিতে আদিত্য-এল ১ সময় নেবে ৪ মাস।

সংস্কৃত ভাষায় সূর্যের আরেক নাম আদিত্য। সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে পাঠানো নভোযানটির নাম তাই সূর্যের নামেই রাখা হয়েছে আর এল ১ । এটি আসলে লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট ১’র সংক্ষিপ্ত রূপ। পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর যেখানে গিয়ে থামবে আদিত্য, সেই এলাকাটিকেই সূর্যের লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেছে ইসরো।

ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সংজ্ঞানুযায়ী, লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট হলো মহাবিশ্বের এমন একটি এলাকা, যেখানে দুই বৃহৎ বস্তু, যেমন সূর্য ও পৃথিবীর মহাকর্ষীয় শক্তি পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। আদিত্য-এল ১ যদি তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, তাহলে পৃথিবী যে গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে সেই একই গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হবে আদিত্যও।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো জানিয়েছে, শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণের পর লেগ্রেঞ্জ পয়েন্টে যাওয়ার আগে বেশ কয়েকবার পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করবে আদিত্য-এল ১। এতে সূর্যের কক্ষপথে পৌঁছাতে সুবিধা হবে নভোযানটির।

ইসরো জানিয়েছে, লেগ্রেঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছানোর পর সূর্যের তিন স্তর সোলার করোনা (সূর্যের বহিরাবরণ) ফটোস্ফেয়ার (সূর্যের পৃষ্ঠ, খালিচোখে পৃথিবী থেকে আমরা এই অংশটি দেখি) এবং ক্রোমোস্ফেয়ার (ফটোস্ফেয়ার ও সোলার করোনার মধ্যবর্তী অর্ধতরল স্তর) পর্যবেক্ষণ ও এ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে আদিত্য-এল ১। এই কাজের জন্য নভোযানটি প্রয়োজনীয় ৭টি বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।

এই অভিযানে ব্যয় কত হয়েছে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য দেয়নি ইসরো। তবে সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গোটা অভিযানের বাজেট ধরা হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৩শ’ ৭৮ কোটি রুপি। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪৯৯ কোটি ২৪ লাখ ৬৯ টাকা।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news