পাকিস্তানের গোলযোগপূর্ণ খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে জোড়া বিস্ফোরণে পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট এসপি এবং আরও দুই পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। জিও টিভি জানিয়েছে, শুক্রবার ২৪ অক্টোবর প্রদেশের হাঙ্গু জেলায় অতর্কিত এই হামলা চালানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত পুলিশ কর্মকর্তার নাম আসাদ জুবায়ের। তিনি যখন একটি প্রথম বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করতে ছুটে যাচ্ছিলেন, তখন তার গাড়িটি তাৎক্ষণিক বোমা হামলার শিকার হয়।
প্রদেশটির পুলিশ মহাপরিদর্শক জুলফিকার হামিদ বলেন, "হামলায় উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরও দু'জন শহীদ হয়েছেন। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘুলমিনায় একটি পুলিশ চেকপয়েন্টের পাশে ঘটে এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি এসপি জুবায়েরের গাড়ি লক্ষ্য করে করা হয়।"
হাঙ্গু জেলা পুলিশ কর্মকর্তা খানজেব মোহমান্দ জানান, বিস্ফোরণের পর আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এবং কমান্ডোরা এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।
প্রেসিডেন্টের নিন্দা, আঙ্গুল ভারতের দিকে
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি পুলিশ কর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীরা এটি ঘটিয়েছে। তিনি আক্রমণকারীদের 'পাকিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতার শত্রু' বলে অভিহিত করেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি নিহত পুলিশ সদস্যদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এসপি জুবায়ের এবং দুই পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না।
খাইবার পাখতুনখোয়ায় সন্ত্রাসের ভয়াবহতা
২০২১ সালে তালেবানরা আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে পাকিস্তানে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে সীমান্তসন্ত্রাস ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশজুড়ে মোট সহিংসতার ৯৬ শতাংশেরও বেশি এই দুটি প্রদেশেই ঘটে।
একটি পুলিশ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৬০০টিরও বেশি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে এই ধরনের ঘটনায় কমপক্ষে ১৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ৭৯ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
