ইউক্রেনের জ্বালানি ও আবাসিক অবকাঠামোতে ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতভর চলা এই হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন এবং দেশজুড়ে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ। 

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর বরাতে জানা গেছে, রাশিয়া আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে একযোগে ৫০৩টি হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে ছিল ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৫৮টি ড্রোন। ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৪০৬টি ড্রোন ধ্বংস করতে পারলেও মাত্র ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যার ফলে একাধিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

 জ্বালানি অবকাঠামোই ছিল মূল লক্ষ্য

হামলার মূল লক্ষ্য ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো। রাজধানী কিয়েভসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ব্ল্যাকআউট।

ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জানিয়েছেন, “রাশিয়া আবারও আমাদের জ্বালানি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত কিছু অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।”

শীত ঘনিয়ে আসায় রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় ইউক্রেনে মানবিক সংকটও আরও তীব্র হচ্ছে।

 রাশিয়ার দাবি: ‘উচ্চনির্ভুল’ অস্ত্র ব্যবহার

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথ থেকে ‘উচ্চনির্ভুল দূরপাল্লার অস্ত্র’ ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে ছিল ভয়ংকর হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও।

দোনেৎস্কে ভয়াবহ সংঘর্ষ

অন্যদিকে, দোনেৎস্কের ফ্রন্টলাইনের শহর পোকরোভস্কে চলছে তীব্র লড়াই। শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধান ওলেক্সান্দর সিরস্কির দাবি, তাদের বাহিনী শহরের পূর্বাংশে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে।

 যুদ্ধের চতুর্থ বছরে আরও জটিলতা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখন চতুর্থ বছরে পা দিচ্ছে। তবে এত দীর্ঘ সময় পরও কোনো শান্তি প্রচেষ্টায় অগ্রগতি নেই। বরং ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে ইউরোপের এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত।

 

news