ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর 'আল-আকসা তুফান' অভিযানের সময় ইহুদিবাদী ইসরায়েল তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথভাবে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে এবার বসতি স্থাপনকারীরাই ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছে। তারা জোর দাবি জানাচ্ছে একটি অফিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠনের, যাতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের অভিযানে সংঘটিত নিরাপত্তা ব্যর্থতার বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা যায়।
তেল আবিব থেকে নাহারিয়া: ক্ষোভের আগুন ছড়াচ্ছে
ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকারীরা তেল আবিব ও নাহারিয়া শহরে এই বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল— প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের কাজের প্রতি তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা এবং দ্রুত একটি সরকারি তদন্ত কমিটি গঠন করা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার ও সেনাবাহিনীর চরম ব্যর্থতার কারণেই এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা'র বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, বিক্ষোভগুলো তেল আবিব শহরের সরকারি ভবন ও প্রধান চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভে কিছু সক্রিয় বসতি স্থাপনকারী এবং সেই দিনের হামলায় নিহত ও বন্দি ইসরায়েলিদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
ভুল ঢাকতে চাইছে মন্ত্রিসভা?
বিক্ষোভকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, ৭ অক্টোবরের ঘটনাগুলো তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিটি গঠন না করা— সেই দিনের মারাত্মক ভুলগুলো ঢাকার জন্য মন্ত্রিসভার গোপন চেষ্টারই ইঙ্গিত দেয়।
এই বিক্ষোভের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একইসময়ে কিছু ইহুদিবাদী আইনি গোষ্ঠীও ঘোষণা করেছে যে, তারা মন্ত্রিসভাকে তদন্ত কমিটি গঠনে বাধ্য করার জন্য উচ্চ আদালতে একটি আনুষ্ঠানিক পিটিশন জমা দিয়েছে।
তবে আল-শার্ক আল-আওসাত পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার ৩০ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র তিন জন মন্ত্রী এই কমিটি গঠনের পক্ষে, বাকিরা এর বিরোধিতা করছেন।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন স্পষ্ট
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমগুলো এই বিক্ষোভকে ইসরায়েলের ভেতরের বিভিন্ন স্তরে গভীর বিভাজন এবং সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মারাত্মক ব্যর্থতার প্রতীক হিসেবে দেখছে।
এই বিক্ষোভগুলো এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলা নিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দাবি করে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভারের ওপর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে।
উল্লেখ্য, ইহুদিবাদী ইসরাইল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিল দুটি প্রধান লক্ষ্য নিয়ে: হামাস আন্দোলনকে নির্মূল করা এবং ইহুদিবাদী বন্দিদের মুক্ত করা। কিন্তু তারা দুটি লক্ষ্যই অর্জনে ব্যর্থ হয় এবং শেষ পর্যন্ত বন্দি বিনিময়ের জন্য হামাসের সাথে চুক্তিতে আসতে বাধ্য হয়।
