ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় নিরাপত্তার ঝুঁকি বেড়েছে শুনে সবাই চিন্তায় পড়ে গেছে। মার্কিন বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফএএ সতর্কতা জারি করতেই তিনটি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন কারাকাস থেকে ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে হাজারো যাত্রী আটকে পড়েছেন, আর এ অঞ্চলের আকাশপথে উত্তেজনা বাড়ছে। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই খবরটা প্রথম ছড়িয়েছে।
ফ্লাইটরাডার২৪ এবং সিমন বলিভার মাইকেটিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ব্রাজিলের গোল, কলম্বিয়ার অ্যাভিয়াঙ্কা এবং পর্তুগালের ট্যাপ এয়ার শনিবার কারাকাস থেকে ছাড়ার সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। এর ফলে যাত্রীরা বাড়ি ফেরার প্ল্যান ভেস্তে গেছে।
কলম্বিয়ার এরোনটিকা সিভিল একটা বিবৃতিতে বলেছে, মাইকেটিয়া এলাকায় 'নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং সামরিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি' হওয়ায় বিমান চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এটা শুনে যাত্রীরা আরও ভয় পেয়ে গেছেন।
ট্যাপ এয়ার পর্তুগাল নিশ্চিত করেছে, শনিবারের পাশাপাশি আগামী মঙ্গলবারের ফ্লাইটও বাতিল হচ্ছে। কোম্পানিটা রয়টার্সকে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন এফএএ-এর সতর্কতার ভিত্তিতে নেওয়া। কারণ, সতর্কতার পর ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় নিরাপত্তা আর নিশ্চিত নয়।
স্পেনের আইবেরিয়া এয়ারলাইনসও পিছপা হয়নি। তারা জানিয়েছে, সোমবার থেকে কারাকাসের ফ্লাইট পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বাতিল করছে। তবে শনিবার মাদ্রিদ যাওয়ার ফ্লাইটটা উড়িয়েছে। এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, "কোম্পানি পরিস্থিতি দেখছে, আর ফ্লাইট কখন শুরু হবে সেটা ঠিক করবে।"
এদিকে, কোপা এয়ারলাইনস এবং উইঙ্গো শনিবার মাইকেটিয়া থেকে তাদের ফ্লাইট চালিয়েছে। কিন্তু ফ্লাইটরাডার২৪-এর খবরে বলা হয়েছে, ল্যাটাম এয়ারলাইন্সের রবিবারের বোগোতা যাওয়ার ফ্লাইটও বাতিল হয়েছে।
মার্কিন এফএএ-এর বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি আর সামরিক কর্মকাণ্ড বাড়ায় বিমান চলাচলের 'সব উচ্চতা'তেই ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সেপ্টেম্বর থেকে এই অঞ্চলে জিএনএসএস ইন্টারফেয়ারেন্স (নেভিগেশন সিস্টেমে ব্যাঘাত) বেড়েছে, যা ফ্লাইটের পথে সমস্যা করতে পারে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই এলাকায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি অনেক বেড়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরি, অন্তত আটটা যুদ্ধজাহাজ আর এফ-৩৫ বিমান দেখা গেছে। এসবের মধ্যে ভেনেজুয়েলা আর মার্কিনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, যা সিভিলিয়ান ফ্লাইটের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
এখন সবার চোখ আটকে আছে – পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে? যাত্রীরা কীভাবে প্রভাবিত হবেন, সেটাও দেখার বিষয়।
