ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার জন্য আবারও ভয়ংকর ষড়যন্ত্র করছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং তাদের মদদপুষ্ট শত্রুপক্ষ— এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়।

তারা সতর্ক করে বলেছে, এটি শুধু হত্যাচেষ্টা নয়— বরং এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গোটা ইরানকে অস্থিতিশীল করে ফেলার চেষ্টা চলছে। খবর জিও নিউজের।

ইরানের বার্তাসংস্থা আইএসএনএ জানিয়েছে, গোয়েন্দামন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেন, এবারের ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য পুরো ইরানি শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করা। কখনও হত্যাচেষ্টা, কখনও সরাসরি হামলার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নেতাকে টার্গেট করতে চাইছে শত্রুরা।

গোয়েন্দামন্ত্রী কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার কথা বলেছেন কি না— তা এখনো পরিষ্কার নয়। যদিও ইরানি কর্মকর্তারা প্রায়ই বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন, তবে খামেনিকে সরাসরি হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে এমন মন্তব্য খুব কমই শোনা গেছে— বিশেষ করে চলতি বছরের জুনে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর আগে।

খাতিব আরও দাবি করেন, এসব পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িতরা শত্রুপক্ষের মদদপুষ্ট অনুপ্রবেশকারী। এসময় তিনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেন।

চলতি বছরের জুনে ১২ দিনের সংঘাতে ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে যুক্তরাষ্ট্রও মূল পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে এতে যোগ দেয়।

যুদ্ধ চলাকালে গণমাধ্যমে আসে— ইসরায়েল যখন খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এতে আপত্তি জানান। তার মতে, এমন হামলা ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধকে ভয়ংকর পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারত।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বিষয়টি গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দিলেও বলেন, এমন পদক্ষেপ সংঘাতের দ্রুত অবসান ঘটাতে পারত।

সেই সময় ট্রাম্প বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যা করা ‘খুব সহজ’, তবে ‘এখনই তাকে হত্যা করা হবে না’। পরে তিনি তার সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দাবি করেন— তিনি খামেনিকে “ভয়াবহ ও লজ্জাজনক মৃত্যু” থেকে বাঁচিয়েছেন।

৮৬ বছর বয়সী খামেনি ১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রীয় সব সিদ্ধান্তে তার চূড়ান্ত মতামতই কার্যকর হয়।

চলতি মাসের শুরুতে প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেন, যুদ্ধের সময় তিনি বিশেষভাবে খামেনির নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তার আশঙ্কা— সর্বোচ্চ নেতার কিছু হলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

এর আগে জুলাইয়ে খামেনি বলেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য ছিল ইরানকে দুর্বল করা, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করা এবং জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে বর্তমান শাসনব্যবস্থা উচ্ছেদের চেষ্টা করা।

২৪ জুন থেকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর আছে। তবে তেহরান যদি আবার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে— ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র নতুন হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

news