রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রাণপণ চেষ্টা করছে— এমন দাবি তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার অভিযোগ, ওয়াশিংটনের এসব উদ্যোগের পরেও ইউক্রেন নাকি কোনো কৃতজ্ঞতাই দেখাচ্ছে না। তাই আবারও তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

রোববার ট্রাম্পের সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে এএফপি।

সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ২৮ দফা শান্তি প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ প্রস্তাব নিয়ে রোববার জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন নেতারা আলোচনায় বসেছেন।

এই আলোচনার আগেই নিজের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “আমাদের উদ্যোগের বিপরীতে ইউক্রেনের কৃতজ্ঞতা একেবারে শূন্য।”

তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পোস্টের বেশ কিছু বাক্য পুরোপুরি ক্যাপিটালে লেখায় নেটিজেনরা বলছেন— তিনি যেন চিৎকার করে রাগ প্রকাশ করছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হামলার জন্য দায়ী করলেও ট্রাম্প কখনোই মস্কোর বিরুদ্ধে সরাসরি নিন্দা করতে রাজি নন। বরং পুরো যুদ্ধের জন্য তিনি দায়ী করেছেন তার পূর্বসূরি জো বাইডেনকে— যাকে তিনি আবারও ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘ঘুমকাতুরে জো বাইডেন’।

সবশেষ পোস্টেও স্পষ্ট হয়েছে যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের বিরক্তি এবং ইউক্রেন ও মিত্রদের প্রতি ক্ষোভ।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু করে, যা এখনো চলছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের উল্লেখযোগ্য অংশ দখলে নিয়েছে রাশিয়া। দুই পক্ষই ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, যদিও সঠিক তথ্য প্রকাশ খুবই সীমিত।

নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন— তিনি ক্ষমতায় এলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন।

কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধ বন্ধের একাধিক উদ্যোগ নিলেও কোনোবারই তা সফল হয়নি।

সর্বশেষ শান্তি প্রস্তাব— ২৮ দফার এই পরিকল্পনা— উপস্থাপনের পর নিজ দলেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প।

বিশ্লেষকদের মতে, পরিকল্পনাটিতে রাশিয়ার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধকালীন দাবি কোনো পাল্টা যুক্তি ছাড়া মেনে নেওয়া হয়েছে, যা অনেকেরই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।

ট্রাম্প মাঝেমধ্যে বলেন, তিনি পুতিনের ওপর ‘নাখোশ’। কিন্তু সরাসরি কোনো নিন্দা বা কঠোর মন্তব্য করতে তিনি এড়িয়ে যান। বরং চাপ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে।

রোববারের পোস্টে ট্রাম্প সমালোচনা করেন কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের— যারা এখনো রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি।

পাশাপাশি তিনি বাইডেনকে ‘দুর্নীতিবাজ জো’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন— তিনি নাকি ইউক্রেনকে বিনামূল্যে অস্ত্র দিয়েছেন।

দীর্ঘ পোস্টে একবারই পুতিনের নাম নেন ট্রাম্প। তার দাবি— “পুতিন ভেবেছিল এখন স্লিপি জো বাইডেন ক্ষমতায়। এটাই ইউক্রেনে হামলার সুবর্ণ সুযোগ”— আর সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছে রাশিয়া।

news