নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ভোট ডাকাতির সরকারের পতন ছাড়া কোন বিকল্প নাই। অবৈধ সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। তারা ভুলে গেছে গায়ের জোড়ে বেশী দিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। এই সরকার যে চুরি, ডাকাতি, গুণ্ডামি করে ক্ষমতায় আছে এটা সারা দুনিয়া জানে।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় সংহতি মঞ্চ আয়োজিত " বিদ্যূত বিভ্রাটে জনভোগান্তির প্রতিবাদে, কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য ও পাচার রোধের দাবিতে এবং জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসের মূল বই থেকে ইসলামী বিষয়াদি বাদ দেয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মান্না বলেন, এই সরকার যে চুরি, ডাকাতি, গুণ্ডামি করে ক্ষমতায় আছে। এটা সারা দুনিয়া জানে। ওরা যে র্র‌্যাবকে দিয়ে গুণ্ডামি করে র‌্যাব একটা এলিট ফোর্স, সম্মানিত বাহিনী হবার কথা। আমাদের দেশের পুলিশ মানুষের ভালোবাসা পাবার কথা। তাদের দিয়ে ব্যালট বাক্স ডাকাতি করায়, তাদের দিয়ে জনগণের ওপর  নির্যাতন করায়। এই জন্যে আমেরিকার মতো দেশসহ পৃথিবীর অনেক বড় বড় দেশ পুলিশ-র‌্যাবের বড় কর্মকর্তার ওপরে স্যাংসন দিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। চিন্তা করে দেখেন র‌্যাব-পুলিশের মতো বাহিনী যদি আন্তর্জাতিকভাবে ঘৃনিত হয় তাহলে আমাদের সম্মান থাকে কোথায়?

তিনি বলেন, একবার শুনেছি পেয়াজ ছাড়া তরকারি খাওয়া যায়, অল্প সময়ের মধ্যে হয়ত শুনব তেল ছাড়া তরকারী রান্না করা যায়, তেল ছাড়া বাত্তিও জ্বালানো যায়। সরকারের কোনো লজ্জা, ভয়, শঙ্কা নাই। এই সরকার হলো বেহায়া সরকার।

মান্না বলেন, পদ্মা সেতুর উপর দাড়িয়ে একজন হাত দিয়ে নাট-বল্টু খুলেছেন। রেঞ্জ দিয়ে খুলেছে কেউ দেখেছেন? আমি দেখিনি। আমি সরকারকে বলি। ওকে যে গ্রেফতার করে রিমাণ্ডে নিলেন তার সম্পর্কে সব কথা বলেছেন, ওকেতো একটা কথা বলতে দিলেন না। কিছু লিখতে দিলেন না। যদি সে রেঞ্জ দিয়ে নাট খুলে থাকে তাহলে সেই ছবি আমাদের দেখাতে পারতেন না? কিন্তু সেটাতো দেখাননি। রেঞ্জ দিয়ে নাট খোলার ছবি দেখান। যদি না দেখাতে পারেন তাহলে নিরীহ একজন টিকটকারকে কেন জেলে রেখেছেন?

মান্না বলেন, দেশের সকল কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। চামড়া শিল্পও আজ ধ্বংসের পথে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রানের লক্ষে কোরবানী চামড়া সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

শওকত মাহমুদ বলেন, দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। আমাদের রাজপথে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। তারা আর এই সরকারকে দেখতে চায় না। কোনো স্বৈরাচারী সরকার কখনো নিজ থেকে সরে যায় না। জনগণ চায় পরিবর্তন। জনগণ চায়, এই সরকার অতি দ্রুত তার পদ থেকে পদত্যাগ করুক বা আমরা তাদের সরিয়ে দেই। সেটা করতে হলে, আমাদের সবাইকে অবশ্যই রাস্তায় নামতে হবে।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতের অপরাধীদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবি জানিয়ে কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হলে প্রথমে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সাশ্রয়ী ব্যবহার, এসির ব্যবহার বন্ধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। সর্বত্র এসির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ, কৃষি-শিল্পের অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে বিদুৎ খাতে চুরি, দূর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সিস্টেম লস কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ, চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে না পারলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসমূহ বন্ধ করে দিয়ে বিশাল অংকের অর্থ সাশ্রয় করা এবং সে অর্থ বিদ্যুৎ পেতে অন্যত্র ব্যয় করা উচিত।

মুফতী মজিবুর রহমান অবিলম্বে সকল আলেম-উলামাদের নি:শর্ত মুক্তি দাবী জানিয়ে বলেন, দেশের স্বার্থে আলেম সমাজকে কারাগারে রাখা অনৈতিক। পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম বাদ দিলে সরকারের পতন হকে ভয়াবহ।

মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, দেশে ভয়াবহ সংকট চলছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

জাতীয় সংহতি মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী ও নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একে এম আশরাফুল হকের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সিদ্দিকুর রহমান খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতী মজিবুর রহমান, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জাস্টিস পার্টি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির মহাসচিব তালুকদার মকবুল হোসেন, নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা মাওলানা এস এম ইসমাইল প্রধান প্রমুখ।

news