বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এখন দেশের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটা অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন করে জনকল্যাণমুখী ও জবাবদিহি করতে বাধ্য এমন সরকার গঠনের পথ খুলে দেওয়া।
মহান বিজয় দিবসে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, আসুন আমরা সব ধরনের বিভাজন আর হিংসা ভুলে গিয়ে একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করি—মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াই।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর মাধ্যমে পাঠানো বিজয় দিবসের এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেছেন।
বাণীতে তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে নেয়। এই দিনে তিনি দেশের মানুষ ও প্রবাসী সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সবার জীবন সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক—এই কামনা করেন তিনি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। পাশাপাশি যেসব মা-বোন স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের প্রতিও সশ্রদ্ধ সালাম জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করা হয়। দেশের অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বিজয় এনে দিয়েছেন। তাই ১৬ ডিসেম্বর জাতির জন্য গর্ব, অহংকার আর আত্মত্যাগের এক মহাকাব্যিক দিন।
তিনি বলেন, শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ওপর দাঁড়ানো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা বারবার ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীর দুঃশাসনে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সংবাদপত্রসহ বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা দমন করা হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, টানা একের পর এক প্রহসন ও একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে জনমতকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। বিরোধী মত দমাতে গুম, খুন ও মিথ্যা মামলার মাধ্যমে জনগণের ওপর ভয়ংকর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই করা অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের মাধ্যমে এক নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে। এর ফলে দেশে আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার নতুন আশা জেগেছে।
তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে সুষ্ঠু ও সবাই গ্রহণ করবে এমন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠনই এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি।
বাণীর শেষে তারেক রহমান বিজয় দিবস উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন এবং দেশবাসীর প্রতি ঐক্য, সহনশীলতা ও মানবিকতার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক—বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকবো।
