নাজমুল হোসেন শান্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও তার সঙ্গে এখনও কথা হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের। শান্তর এমন সিদ্ধান্তর পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়ী করছেন ফারুক। শান্তর এমন চাওয়ার পেছনে কারণ খোঁজার জন্য দ্রুতই এই ব্যাপারে তার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তিনি।
ফিল্ডিং সাজানো, বোলিং পরিবর্তন কিংবা ড্রেসিং রুমে সামলানো; অধিনায়কত্বের মৌলিক বিষয়গুলোতে বরাবরই পাশ মার্ক পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে অধিনায়কের পাশাপাশি নিজের ব্যাটিং সামলানোটাও বড় এক দায়িত্ব। সেখানেই প্রায়শই ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়কত্বে ঝলক দেখানো শান্ত। বাঁহাতি ব্যাটারের সবচেয়ে বড় সমস্যা ধারাবাহিকভাবে রান করতে না পারা।
সবশেষ কয়েক সিরিজে ধারাবাহিকতার ছিঁটেফোটাও দেখাতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। রানখরায় ভুগতে থাকায় অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে সমালোচনাটা হচ্ছে প্রবলভাবে। সেটা হয়ত চোখ এড়িয়ে যায়নি তারও। নেতৃত্বের চাপ যে ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলছে সেটা হয়ত অনুমান করতে পারছেন শান্ত নিজেও। সেটা ভেবেই হয়তো অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যদিও এই ব্যাপারে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করতে চান ফারুক।
তিনি বলেন, 'আমি জানি না শান্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছে কিনা। আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা হয়, এখন অনেক কিছু নিয়েই ক্রিকেটাররা আপসেট থাকে। কারণ তাদের পারফরম্যান্সের চিন্তা করতে হয়, যে কোন সামাজিক মাধ্যমের খবর তাদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ক্রিকেটারদের তাই এসব ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার যে, তারা যে কোন কিছুই ফিল করুক। সেটা যে জায়গায় কথা বলা উচিত সেখানে যা মনে করে সেটা বলতে পারেন। যেমন ক্রিকেট অপারেশন্স, সিইও এরপর চেয়ারম্যান আছেন, সে জায়গা গুলোতে ওই ক্রিকেটার তার মনের কথাটা বলতে পারেন।'
এই ব্যাপারে পত্রিকা দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না বলেও জানিয়েছেন ফারুক। তিনি আরও বলেন, আর যদি কোন ক্রিকেটার মনে করেন যে তার দায়িত্ব সে চালিয়ে নিতে পারছে না। সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। তো শান্তর যে ব্যাপারটা সেটা আমিও শুনেছি। কিন্তু এর পেছনে কোন কারণ আছে কিনা, কেন করতে চাচ্ছে কিনা এগুলো খুঁজে বের করাটা খুব জরুরী। আমি ওগুলো নিয়ে শান্তর সঙ্গে কথা বলব।
আজকে আমি চট্টগ্রামে যাবো। কাল, পরশুর মধ্যে কোচ, অধিনায়কের সঙ্গে বসে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। তবে যেটা হল কেউ কোন দায়িত্ব করতে না চাইলে সে বলল পারব না, আমরা বললাম ওকে ধন্যবাদ। এটা সমাধান না। আমাদের পেছনের কারণ জানতে হবে। আমি তো পত্রিকা পড়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। এই মুহূর্তে ওর সঙ্গে সেই ভাবে কোন কথা হয়নি।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন শান্ত। তবে তৎকালীন নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ডের চাওয়াতে অধিনায়কত্ব চালিয়ে যান তিনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাকিব আল হাসানের জায়গায় স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্ত। এখন পর্যন্ত তাঁর নেতৃত্বে ৯ টেস্টের তিনটিতে জয় পায় বাংলাদেশ। যেখানে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় আছে। বাংলাদেশকে কমপক্ষে ৫ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন অধিনায়কদের তালিকায় জয়ের শতকরা হিসেবে সবার উপরে আছেন শান্ত।