একটা রূপকথার বিয়ের জন্য সাজ সাজ করছিল গোটা দেশ। পাত্রী বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট তারকা স্মৃতি মান্ধানা, আর পাত্র স্বনামধন্য গায়ক পলাশ মুচ্ছল। তাদের প্রেমের এই গল্পটা যেন পরিণতির দিকেই এগোচ্ছিল। কিন্তু জীবনের সব হিসাব নিকাশ তো আর কাগজ-কলমের মতো মেলে না। হঠাৎ করেই অঙ্কের মাঝে ঢুকে পড়ল এক বড় ধরনের ‘যদি’।
স্মৃতি মান্ধানার বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ঠিক সেই দিনই, যেদিন তার মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর ফলেই, অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল সেই স্বপ্নের বিয়ে।
যে বাড়িতে কয়েকদিন ধরে কেবল আনন্দ আর গানের রেশ ছড়াচ্ছিল, হঠাৎ করেই সেখানে নেমে এল গভীর চিন্তা ও উদ্বেগ। মনে পড়ে যায় সেই পুরনো কথাটাই – ‘মানুষের মনে যতই পরিকল্পনা থাক, আসলে যা হবার তাই হয়’।
কয়েকদিন ধরেই স্মৃতি আর পলাশের প্রি-ওয়েডিং অনুষ্ঠানের ভিডিওতে সরগরম ছিল ইন্টারনেট। একদিকে ক্রিকেটের মাঠের লড়াকু স্মৃতি, অন্যদিকে সুরের জগতের পলাশ – দুজনেই একে অপরের গলায় মালা পরাচ্ছেন, হাত ধরে নাচছেন জনপ্রিয় গানের তালে, আবার কখনও বা একসাথে ক্রিকেটও খেলছেন।
ক্রিকেট মাঠে যাকে আমরা কঠোর ও সংযত দেখে অভ্যস্ত, সেই স্মৃতিকেই দেখা গেল অত্যন্ত প্রাণবন্তভাবে নাচতে। অনেকেই অবাক হয়ে বলছিলেন, “যে এত সুন্দর ব্যাট করে, সে নাচেও এত পারদর্শী!” পলাশ আর স্মৃতির মধ্যে রসায়ন নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সেই বিশেষ মুহূর্তটির জন্য।
কিন্তু কে জানতো, এত সাজসজ্জা, এত উৎসাহের মাঝেই হঠাৎ করে সব ভেস্তে যাবে? হাজারো আলোর রোশনাইয়ের মাঝেও যেন নেমে এলো এক করুণ অন্ধকার!
স্মৃতি মান্ধানার ম্যানেজার তুহিন মিশ্র ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আজ সকালে নাস্তা করার সময় হঠাৎ করেই স্মৃতির বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেছিলাম, ভেবেছিলাম তিনি হয়তো সুস্থ বোধ করবেন। কিন্তু যখন তার অবস্থার আরও অবনতি হল, আমরা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ডাকি এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে আছেন।”
এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে স্মৃতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার বাবা সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার বিয়ের সমস্ত আয়োজন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হবে।
উল্লেখ্য, এই বিয়েতে খুব বেশি লোকজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পলাশ মুচ্ছল নিজেই বলেছিলেন, এটি হবে একটি খুবই অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠান। পলাশের তরফ থেকে ৭০ জন এবং স্মৃতির তরফ থেকে ৭০ জন – মোট ১৪০ জন কাছের মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বড় কোনো রিসেপশনেরও আয়োজন করা হয়নি, ছিল কেবল একটি ছোট্ট গেট-টুগেদার।
রাজনীতি ও ক্রিকেট অঙ্গনের বেশ ক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদেরও এই অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল। কিন্তু সব আয়োজনকে ছাপিয়ে এলো এই দুঃসংবাদ। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন স্মৃতির বাবা, আর তার সাথে সাথেই পিছিয়ে গেল সেই কাঙ্খিত বিয়ে। এখন, স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানার সুস্থতাই দেশের একমাত্র কামনা।
