ভারতের স্পিনার কুলদীপ যাদব গুয়াহাটি পিচ নিয়ে যা বলেছেন, তাতে স্পষ্টই গৌতম গাম্ভীরের নেতৃত্ব ও ফিল্ড প্লেসমেন্ট নিয়ে তাঁর অসন্তোষ ফুটে উঠেছে। তিনি সরাসরি বলেছেন, এই পিচে স্পিনার বা পেসার কারোরই কোনো কাজ হয়নি।

গুয়াহাটির পিচ প্রসঙ্গে কুলদীপ তাঁর মূল্যবান মতামত দিতে গিয়ে বলেন, এই উইকেটে স্পিনার কিংবা পেস বোলার কারোর জন্যই কোনো সাহায্য ছিল না। তাঁর মতে, ভারতীয় স্পিনাররা ধারাবাহিকভাবে বোলিং স্পেল দিয়েও প্রতিপক্ষ দলকে চাপে রাখতে পারেনি, এবং ফিল্ডিং পজিশনও যথেষ্ট টাইট ছিল না।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর থেকে কুলদীপ যাদবই ভারতের সবচেয়ে সফল বোলার, তা সেটা টেস্ট বল হোক বা সাদা বল। ২০২৫ সালে ঘরের মাঠে টেস্টে তিনিই ভারতের শীর্ষ উইকেট শিকারীদের একজন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অনেক উইকেট নেওয়ার পর ইডেন গার্ডেন্সে কিছু উইকেট এবং এখন গুয়াহাটিতে আরও একবার ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

তবে সবকিছুর পরেও দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৮০ রানের স্কোর ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়। কুলদীপ আবারও পিচের উপর সরাসরি আঘাত হেনে বলেন, এটি বোলারদের জন্য একদমই সহায়ক ছিল না। ভারতীয় স্পিনাররা বলকে তেমন স্পিন করাতে পারেনি, অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনাররা একই পিচে উল্লেখযোগ্য স্পিন পেয়েছে।

ইডেন গার্ডেন্সে প্রথম দুই দিনে মোট ২৬টি উইকেট পড়লেও, গুয়াহাটিতে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাই প্রায় দুই দিন ধরে ব্যাটিং করেছে। এই পরিসংখ্যানই দুটি পিচের মধ্যে পার্থক্য প্রমাণ করে।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ৪টি উইকেট নেওয়া কুলদীপ স্পষ্ট ভাষাতেই বলেন, “কলকাতার উইকেট ভিন্ন ছিল, এটা একটা রোড (গাড়ি চালানোর মতো সমতল পিচ)।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এটা চ্যালেঞ্জিং, আর এজনেই এটাকে টেস্ট উইকেট বলে। বোলার হিসেবে এটা প্রতিদিন ঘটে না। আপনি সবসময়ই আধিপত্য বিস্তারের কথা ভাবেন, কিন্তু যখন আপনি একটি ভাল উইকেট পাবেন, তখন আপনি কীভাবে ফিরে আসেন সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গতকাল যেভাবে বোলিং করেছি, আমরা খুব ভাল নিয়ন্ত্রণে ছিলাম, কিন্তু স্পষ্টতই, এক সেশনে একটি জুটি গড়ে উঠায় আমরা খেলায় একটু পিছিয়ে পড়ি।"

সকালের পিচে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা কিছুটা সমস্যায় পড়লেও, সেনুরান মুথুসামি এবং কাইল ভেরেইনি উইকেটহীন সেশন কাটিয়ে খেলাকে পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যান।

কুলদীপ এই প্রসঙ্গে বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছিল গতকাল প্রথম সেশনে উইকেটে একটু আর্দ্রতা ছিল, তাই আমি সেখানে একটু টার্ন পেয়েছিলাম। এরপর ব্যাটিং করতে বেশ ভালই লাগছিল। গতকালও যেমন টার্ন ছিল না, আজও তেমনটি নেই। জাদেজা এবং আমি এ নিয়ে কথা বলেছি, কিন্তু উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুবই ভালো।”

“সেজন্য আমাকেই তো ক্যাপ্টেন হতে হবে,” – বল নিয়ে ক্যাপ্টেনদের against সাইলেন্ট বিদ্রোহ
ইনিংসের প্রত্যেক বোলারই ২৫ ওভারের বেশি বোলিং করলেও, অনেকেই হতবাক হয়েছিলেন যখন সবচেয়ে কার্যকর স্পিনার হওয়া সত্ত্বেও কুলদীপ যাদব দ্বিতীয় দিনে ১২ ওভারের বেশি বোলিং করেননি। তবে, তাঁকে যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাতেই তিনি সন্তুষ্ট বলে জানান। তিনি ৪টি উইকেট নিয়েছিলেন।

তাকে কি আরও বোলিং করানো উচিত ছিল? এই প্রশ্নে কুলদীপ শুধু হাসলেন। “না, সব ভালো,” বললেন তিনি।

কুলদীপ যাদব ব্যাপারটাকে মজা দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমি বলব, সেজন্য আমাকেই তো ক্যাপ্টেন হতে হবে (হেসে)। আর হ্যাঁ, আমি যত ওভারই বোলিং করেছি তাতেই খুব খুশি। আমাদের ৪-৫ জন বোলার আছেন এবং সবাইই খুব ভালো বোলিং করেছেন। আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে, শুধু এক প্রান্ত থেকে বোলিং করিয়ে যেতে পারবেন না। তাই এ নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। আমি ৩০ ওভার বোলিং করেছি; যে কোনও রিস্ট স্পিনারের জন্য ৩০ ওভারই ভালো।”

মোটকথা, কুলদীপের কথায় বার্তায় স্পষ্টই ফুটে উঠেছে যে তিনি পিচ এবং ক্যাপ্টেনের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরোপুরি খুশি নন, কিন্তু তিনি সেটা খুবই স্মার্টভাবে প্রকাশ করেছেন।

news