ভারতের ওয়ানডে ভাইস-ক্যাপ্টেন শ্রেয়াস আইয়ারের সুস্থ হয়ে ফেরার যাত্রা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই মাসেই তার একটি অত্যন্ত জরুরি আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানের তারিখ ধার্য হয়েছে, যার ফলাফলই ঠিক করবে কখন তিনি বেঙ্গালুরুর বিসিসিআই সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন (রিহ্যাব) প্রোগ্রাম শুরু করতে পারবেন।

২০২৬ সালের ব্যস্ত মৌসুমের জন্য ইতিমধ্যে নতুন ওয়ানডে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ভারতীয় দল। এমন পরিস্থিতিতে আইয়ারের এই স্ক্যানের ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আগামী মাসগুলোর জন্য দল কীভাবে প্রস্তুতি নেবে, বিশেষ করে ২০২৭ আইসিসি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে, তা প্রভাবিত করতে পারে।

সিডনিতে যে আঘাত হয়েছিল
ভারতের এই মধ্যযুগের ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনির তৃতীয় ও চূড়ান্ত ওয়ানডে থেকেই খেলা থেকে দূরে। ওই ম্যাচে তিনি তার বাম পাঁজরের নিচের দিকটায় শক্ত একটি আঘাত পান, যার কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ এবং এমনকি প্লীহায়ও (স্প্লিন) কাটা পড়ে।

আঘাতটি গুরুতর ছিল এবং দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, যা তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে রাখে। সিডনির প্রথম স্ক্যানেই আঘাতের সংবেদনশীলতা বোঝা যায় এবং বিসিসিআই মেডিকেল টিম তার অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত তাকে কড়া নজরদারিতে রাখেন।

ইতিবাচক উন্নতি, কিন্তু এখনো ক্রিকেট ট্রেনিং নয়
ভারত ফেরার পর ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছেন আইয়ারের। বাড়ির কাছেই তিনি একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি (ইউএসজি) স্ক্যান করান। স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. দীনশ পারদিওয়ালা সেই রিপোর্ট পরীক্ষা করে নিশ্চিত করেন যে আইয়ার সঠিক পথে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন।

এই অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে হালকা দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং বেসিক আইসোমেট্রিক ব্যায়াম (যেখানে পেশী সংকুচিত হয় কিন্তু দৈর্ঘ্য পরিবর্তন হয় না) শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এখনো তিনি সঠিক ক্রিকেট প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারবেন না। মেডিকেল টিম তার পরবর্তী স্ক্যান সাবধানে পরীক্ষা করে এবং পরবর্তী ধাপে যাওয়ার পূর্ণ চিকিৎসা ছাড়পত্র দিলেই কেবল তিনি পুরোপুরি প্র্যাকটিসে ফিরতে পারবেন।

ডিসেম্বরের স্ক্যানই ঠিক করবে সব
এই মাসেই সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আসছে। ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, শ্রেয়াস আইয়ারের পরবর্তী আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হওয়ার কথা। এই স্ক্যানই ডাক্তারদের প্লীহা ও আশপাশের টিস্যু ভিতরে কতটা ভালোভাবে সেরেছে, তার স্পষ্ট চিত্র দেবে।

ফলাফলের ভিত্তিতে আইয়ারের একজন বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা হবে, যিনি হালকা কন্ডিশনিং থেকে শুরু করে নিয়ন্ত্রিত ট্রেনিং পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বিস্তারিত পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রস্তুত করবেন।

ডাক্তাররা যখন তার সুস্থতা নিয়ে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হবেন এবং সবকিছু ঠিকঠাক দেখবেন, তবেই তাকে বেঙ্গালুরুর বিসিসিআই সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে তার পুনর্বাসন শুরু করার অনুমতি দেওয়া হবে।

নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজে খেলা অনিশ্চিত
বিসিসিআই মেডিকেল টিম খুবই সতর্কতা অবলম্বন করছে, কারণ এই ধরনের আঘাতের জন্য যে কোনো তীব্র ক্রীড়া কার্যক্রমের আগে পুরোপুরি অভ্যন্তরীণ নিরাময় প্রয়োজন। তবে, তার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার গতি দেখে মনে হচ্ছে, আসন্ন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে আইয়ারের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এখন মূল ফোকাস হলো এই ভাইস-ক্যাপ্টেন যেন সঠিকভাবে ও ধারাবাহিকভাবে সুস্থ হন, খুব তাড়াতাড়ি ক্রিকেটে ফিরে আসার জন্য চাপ না তৈরি হয়। তিনি ইতিমধ্যেই ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ মিস করেছেন।

 

news