মমতা সরব হয়েছিলেন আগেই, জাতীয় নির্বাচন তহবিল গঠনের ঘোষণা কংগ্রেসের

 ক্ষমতায় ফিরলে কেন্দ্রের কংগ্রেস (Congress) সরকার ঘৃণা ভাষণ বন্ধে কঠোর আইন তৈরি করবে। শনিবার রায়পুরের মহা অধিবেশনে এই মর্মে প্রস্তাব গ্রহণ করল কংগ্রেস। এছাড়া কংগ্রেস প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, দল ক্ষমতায় ফিরলে জাতীয় নির্বাচনী তহবিল গঠন করা হবে। সেই সরকারি তহবিল থেকে সব দলকে অর্থ সহায়তা করা হবে। নির্বাচনকে অর্থ শক্তির কবল মুক্ত করতে এই সংস্কারের পক্ষে শনিবার অধিবেশনে সরব হন দলের প্রতিনিধিরাও।

ছত্তীসগড়ের রায়পুরে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের (Congress) জাতীয় অধিবেশন। দ্বিতীয় দিন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শনিবার বর্তমান সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং প্রাক্তন সভাপতি সনিয়া গান্ধী অধিবেশনের প্রথম দফায় ভাষণ দেন। দ্বিতীয় দফায় বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন। তার মাঝে পেশ করা হয় রাজনৈতিক প্রস্তাব। তাতে কর ব্যবস্থাতেও বেশ কিছু সংস্কারের কথা বলা হয়েছে।

লক্ষণীয় হল, কংগ্রেসের গৃহীত প্রস্তাবগুলি কার্যত মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট। শনিবার খাড়্গে ও সনিয়ার ভাষণ জুড়ে ছিল নরেন্দ্র মোদীর জমানার বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ। দুই নেতাই অভিযোগ করেন, মোদী সরকারের সময় বিভাজনের রাজনীতি গ্রাস করেছে দেশকে। ঘৃণা ভাষণ এবং সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের অভিযোগেও সরব হন তাঁরা। অন্যদিকে, প্রতিনিধিদের মুখে ছিল ঘৃণা ভাষণ আর বিভাজন রাজনীতির বিরোধিতা।

পরে দেখা যায়, রাজনৈতিক প্রস্তাবেও স্থান পেয়েছে এইসব বিষয়। দলত্যাগ বিরোধী আইনে সংশোধন আনার কথাও আজ ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এই বিষয়ে পৃথক একটি প্রস্তাব পাশ করিয়েছে দল। বিজেপি শাসনে একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেস সহ একাধিক দলে ভাঙন এবং সরকার পতনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে দল এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।

রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৮৬ সালে দেশে দলত্যাগ বিরোধী আইন চালু হয়। মনমোহন সিংহের ইউপিএ সরকার আইনটিকে আরও কঠোর করে। কংগ্রেস শনিবার ঘোষণা করেছে, পার্টি ক্ষমতায় এলে দল ভাঙানোর খেলা আটকাতে আরও কঠোর করা হবে আইনটি।

জাতীয় নিবাচনী তহবিল গড়ার প্রস্তাবটি প্রায় তিন দশক আগের। অসমের নেতা প্রয়াত দীনেশ গোস্বামীর নেতৃত্বে তৈরি কমিটির সুপারিশ ছিল নির্বাচনী প্রচারের খরচ সরকার বহন করুক। তাতে ভোটে কালো টাকার ব্যবহারে হ্রাস টানা যাবে। পরে এই দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসে থাকার সময়ই স্বচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র এবং রাষ্ট্রীয় খরচে ভোটের দাবিতে পথে নামেন তিনি।

কংগ্রেস অবশ্য নির্বাচনী তহবিল গঠনের পক্ষে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ইলেক্টোরাল বন্ড ব্যবস্থার বিরোধিতা করতে। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর চালু হওয়া ওই বন্ড বাবদ আয়ে এ পর্যন্ত ষোলআনা লাভবান হয়েছে বিজেপি। বিরোধীদের ভাগ্যে জুটেছে ছিঁটেফোটা।

রাজনৈতিক প্রস্তাবে কংগ্রেস আজ সংবাদমাধ্যম, বিচার ব্যবস্থার অধিকারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে সুরাহার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বলেছে, কংগ্রেস ঘৃণা, ভেদাভেদ এবং ভয়হীন এক নতুন ভারত উপহার দেবে যেখানে সহিষ্ণুতা বিরাজ করবে।
খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২৩/একে

news