নামাজ নিয়ে হট্টগোল : ক্ষমা চাওয়ার পরে সুন্দরকাণ্ড পাঠ স্থগিত

ভারতে বিজেপিশাসিত লক্ষনৌয়ের লুলু মল-এ নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এটি উদ্বোধনের এক সপ্তাহের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

লুলু মল-এ নামাজ পড়ার ছবি ভাইরাল হওয়ার পর ‘হিন্দু মহাসভা’ এখানে (রামায়ণের) ‘সুন্দরকাণ্ড’ পাঠ করার ঘোষণা দেয়। হিন্দু মহাসভার জাতীয় মুখপাত্র শিশির চতুর্বেদী বলেছেন– লুলু মলে যে জায়গায় নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে আজ সন্ধ্যায় ‘সুন্দরকাণ্ড’ পাঠ করা হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মল ম্যানেজার  সমীর বর্মা শিশির চতুর্বেদীর বাড়িতে পৌঁছে যান এবং তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপর ‘হিন্দু মহাসভা’ সুন্দরকাণ্ড পাঠ স্থগিত করলেও এবার হিন্দুত্ববাদী নেতা কমলেশ তিওয়ারির স্ত্রী কিরণ, মলে সুন্দরকাণ্ড পাঠে অনড় হয়েছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলযোগের আশঙ্কা থাকায় মলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। 

গত ১১ জুলাই লুলু মল উদ্বোধন করেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। লুলু গ্রুপের এমডি, এমএ ইউসুফ আলী আরব বিশ্বে একজন বড় ব্যবসায়ী। মলটি উদ্বোধনের দু'দিন পরে অর্থাৎ ১৩ জুলাই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল যাতে কিছু লোককে লুলু মল-এ নামাজ পড়তে দেখা যায়। এ নিয়ে সর্বভারতীয় হিন্দু মহাসভাসহ অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, এখানে মলের নামে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান বিতর্ক দেখে মল ম্যানেজমেন্ট সুশান্ত গোল্ড সিটি থানায় অজ্ঞাত লোকেদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।  

মলের জেনারেল ম্যানেজার সমীর বর্মা নামাজের বিতর্ক নিয়ে বলেন- নামাজ পড়া লোকেরা আমাদের কর্মচারী নয়। আমরা এটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখেছি। যারা নামাজ পড়েছেন তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মলে সংগঠিত, ধর্মীয় বা প্রার্থনা অনুমোদিত নয়। এটা পুনরায় আর হতে দেওয়া হবে না।   

পুলিশ ইন্সপেক্টর অজয় সিং বলেন, মলে সতর্কতামূলক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। হিন্দু পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাদের দাবিতে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা সম্পূর্ণ সতর্ক অবস্থায় আছি।  

এদিকে, লুলু মল-চত্বরে নামাজ প্রাকে কেন্দ্র করে বিবাদে প্রকাশ্যে এসেছেন হনুমান গড়ি অযোধ্যার মহন্ত রাজু দাসও। তিনি বলেছেন- লুলু মল এশিয়ার বৃহত্তম মল। এবার লক্ষনৌতে খোলা হয়েছে। এখানে ৮০ শতাংশ মুসলমান কর্মরত। ২০ শতাংশ হিন্দু মেয়ে রাখা হয়েছে। এখানে একটিও মুসলিম মেয়েকে চাকরি দেওয়া হয়নি। মলে যেভাবে নামাজ পড়া হয়েছে, আমরা সেখানে ‘হনুমান চালিসা’ পাঠ করব। কেউ আটকাতে পারবে না।    

গত ১১ জুলাই লক্ষনৌতে লুলু মল উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এটি একটি দুবাই ভিত্তিক কোম্পানি। এটি ২২ লাখ বর্গফুট জায়গার মধ্যে অবস্থিত। এর অভ্যন্তরে ৬ হাজার বর্গমিটার জুড়ে বিস্তৃত দেশের বৃহত্তম ফান পার্কও রয়েছে। লক্ষনৌয়ের আগে এই সংস্থার মল রয়েছে কোচি, তিরুবনন্তপুর এবং ব্যাঙ্গালুরুতেও। এবার উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ ও বারাণসীতেও নয়া শপিং মল খোলার প্রস্তুতি চলছে।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news