আইএসআই মদতে নেপাল থেকে জাল নোট কলকাতায়, বিএসএফকে সতর্কতা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের

 ঘুরপথে জাল নোট পাচার। নেপাল (Nepal) থেকে সরাসরি উত্তরবঙ্গ হয়ে না এসে ঘুরপথে বাংলাদেশ হয়ে কলকাতায় (Kolkata)। এভাবে ‘নতুন রুট’ দিয়ে জাল নোট পাচারের পিছনে আইএসআইয়ের (ISI) ছকই দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে মালদহের এক অস্ত্র পাচারকারী, যার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’শোটির উপর ৮ এমএম বুলেট। ওই বুলেটও জাল নোটের বিনিময়ে কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ এসটিএফের। এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তরফে এই জাল নোটের রুট নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশকেও।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, রুট ও মান, দু’টিতেই পরিবর্তন এনেছে জাল নোট পাচারকারীরা। আইএসআইয়ের মদতেই সরাসরি বাংলাদেশ থেকে জাল নোট (Fake Note) পাচার না করে এবার নেপালের রুটের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, এর আগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেপাল থেকে পানিট্যাঙ্কি অঞ্চল সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় চোরাপথে প্রবেশ করেছে জাল নোট। সেই নোট সরাসরি পৌঁছে গিয়েছে মালদহ ও সেখান থেকে কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে। কিন্তু এভাবে পাচার করতে গিয়ে সিআইডি, কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের এসটিএফ, এমনকী, জেলা পুলিশের হাতেও ধরা পড়েছে জাল নোট। সেই কারণেই জাল নোট পাচারকারীরা এখন বেছে নিয়েছে ঘুরপথ।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, নেপাল থেকে সেই উত্তরবঙ্গেই চোরাপথে পাচার হচ্ছে জাল নোট। কিন্তু জাল নোট শিলিগুড়ি হয়ে মালদহের দিকে না গিয়ে চলে যাচ্ছে কোচবিহারের দিকে। ওই জেলার বেশ কিছু সীমান্তবর্তী অঞ্চল বেছে নিয়েছে পাচারকারীরা। জাল নোট সীমান্ত পেরিয়ে এজেন্ট মারফৎ পাচার হচ্ছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের উত্তরপ্রান্তের জেলাগুলি থেকে সেগুলি রংপুর হয়ে পৌঁছচ্ছে চাপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীতে। ওই দুই জেলা থেকে চোরাপথে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে পাচার হচ্ছে জাল নোট।

সাধারণভাবে মালদহের বৈষ্ণবনগর ও কালিয়াচকে জাল নোটের এজেন্টরা থাকলেও এখন মুর্শিদাবাদের লালগোলা সহ কয়েকটি অঞ্চলকেও ‘টার্গেট’ করেছে পাচারকারীরা। গোয়েন্দাদের মতে, এখন বর্ষাকাল হওয়ার সুবাদে সীমান্তবর্তী অনেক জায়গাই জলমগ্ন। বিএসএফের পক্ষেও অনেক অংশে টহল দেওয়া সমস্যার। সেই সুযোগই নিচ্ছে জাল নোট পাচারকারকীরা। এ ছাড়াও জাল নোটগুলির মানও আরও উন্নত করছে আইএসআই, যাতে সেগুলির সঙ্গে আসলের পার্থক্য বিশেষ বোঝা না যায়। সেই কারণেই বুলেট ও অস্ত্র জাল নোট ব্যবহার করেই কেনা হচ্ছে বলে নিশ্চিত হচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ।

সম্প্রতি বৈঠকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে বিএসএফ ও এসএসবি’র গোয়েন্দাদের বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বর্ষাকালের সুযোগ নিয়ে জাল নোট পাচারের চেষ্টা করা হলেও কীভাব রোখা যায়, তা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা গোয়েন্দা দফতরের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী থানাগুলিকেও সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে। এই সতর্কবার্তা অনুযায়ী জাল নোট পাচারকারীদের উপর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে

news