জম্মু-কাশ্মীরে বাইরের লোকেদের ভোটাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পিডিপির প্রতিবাদ বিক্ষোভ

জম্মু-কাশ্মীরে বাইরের লোকেদের ভোটাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। পিডিপির মুখপাত্র সুহাইল বুখারির নেতৃত্বে আজ দলের নেতারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন।

গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, জম্মু-কাশ্মীরের ভোটার তালিকায় বাইরের ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে পিডিপি আজ (শুক্রবার) শ্রীনগরে একটি প্রতিবাদ মিছিল করেছে। এ সময়ে পিডিপির মুখপাত্র সুহাইল বুখারির নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নেতা এখানে শের-ই-কাশ্মীর পার্কের কাছে দলের সদর দফতর থেকে মিছিল শুরু করেন। 

সুহাইল বুখারি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের ভোটার তালিকায় বাইরের ভোটারদের জোর করে অন্তর্ভুক্ত করার ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এই  মিছিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের অধিকারগুলোকে চূর্ণ করা হচ্ছে।      

পিডিপি নেতা সুহাইল বুখারি বিজেপিকে টার্গেট করে  বলেন, ‘ওরা জম্মু-কাশ্মীরের জনগণের পরিচিতি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার পরিবর্তন করার জন্য কঠোর চেষ্টা করছে, কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ কোনো অবস্থাতেই তা মেনে নেবে না।’ 

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মাধ্যমে পিডিপি নেতারা বৃহস্পতিবার দলের সভানেত্রী মেহেবুবা মুফতি যা বলেছিলেন তা পুনর্ব্যক্ত করতে চেয়েছেন। প্রতিবাদ মিছিলের উদ্দেশ্য হল একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা যে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ এটি সহ্য করবে না।

অন্যদিকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ জম্মু-কাশ্মীরের ভোটার তালিকায় এই অঞ্চলের বাইরের লোকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে   আলোচনার জন্য ২২ আগস্ট একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। ২২ আগস্ট সোমবার সকাল ১১টায় শহরের গুপকার এলাকায় ডা. ফারুক আবদুল্লাহর বাসায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ডঃ ফারুক আব্দুল্লাহ এরইমধ্যে ব্যক্তিগতভাবে পিডিপি সভানেত্রী  মেহেবুবা মুফতি, জেকেপিসিসি সভাপতি ওয়াকার রসুল, জেকেপিসিসির কার্যনির্বাহী সভাপতি রমন ভাল্লা, সিপিআই(এম) মুহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি, আপনি পার্টির সভাপতি সৈয়দ আলতাফ বুখারি, পিপলস কনফারেন্স প্রধান সাজ্জাদ গণি লোন এবং  আম আদমি পার্টির নেতাদের সাথে কথা বলেছেন।       

সেখানকার মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যের পর পিডিপি (জম্মু কাশ্মীর পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি) এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। উভয় দলই একে সরকারের ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছে।   

জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটার তালিকা প্রসঙ্গে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে ভোটার হওয়ার জন্য আবাসিক হওয়া জরুরি নয়। অর্থাৎ‘ভূমিপুত্র’ না হলেও মিলবে ভোটাধিকার। এর পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি সভানেত্রী মেহেবুবা মুফতি। কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীর বিজেপির পরীক্ষাগারে পরিণত হয়েছে। রাজ্যে বাইরে থেকে বিজেপি’র ২৫ লাখ ভোটার আনা হচ্ছে। তিনি  বলেন, নির্বাচনী গণতন্ত্রের কাফনে এটাই শেষ পেরেক।   

২০১৯ সালের আগস্টে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। চলতি বছরের মে মাসে জম্মু-কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল। সেখানে ডি-লিমিটেশনের ফলে ছ’টি আসন বেড়েছে হিন্দু অধ্যুষিত জম্মুতে। একটি সংখ্যালঘু কাশ্মীরে। বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনকে কাজে লাগিয়ে জম্মুতে জয়ের মাধ্যমে গোটা জম্মু-কাশ্মীরে শাসন চালানোর কৌশল নিয়েছেন বিজেপি নেতা  নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহেরা।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news