যমজ বহুতলের আয়ু আর ১৫ মিনিট, দেশের চোখ নয়ডার টুইন টাওয়ারের দিকে

 আর মাত্র ১৫ মিনিট। তার পরেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে নয়ডার টুইট টাওয়ার। প্রস্তুতি শেষ। বন্ধ হয়ে গেছে নয়ডা-গ্রেটার নয়ডার এক্সপ্রেসওয়ে। ২:২৮ মিনিটে বেজে উঠবে সাইরেন, তারপরই ধাপে ধাপে ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর ঘড়ির কাঁটা ২:৩০ হতেই বিকট বিস্ফোরণে ভেঙে পড়বে নয়ডার যমজ অট্টালিকা। মাত্র ১০ সেকেন্ডেই শেষ হয়ে যাবে ভাঙার কাজ (Noida Twin Tower Demolition)।

ধ্বংসের আগে নিয়মমাফিক ১:৪৫ নাগাদ শেষবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে টাস্ক ফোর্সের কর্মীরা। শুধু নয়ডাবাসী নয়, গোটা ভারত আজ টিভির পর্দায় চোখ রেখেছে এই ধ্বংসের কাজ দেখার জন্য।

গত দু’দিন ধরে ওই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য দফায় দফায় মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে যে, দুপুর একটার মধ্যে বাড়ি খালি করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ঠিক করে দেওয়া জায়গা যেন চলে যায় সবাই। আবাসিকদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপেও যাচ্ছে এই বার্তা। ৫০০ মিটার এলাকা পুরোপুরি খালি রাখা হবে বেলা তিনটে পর্যন্ত। সকাল সাতটা থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে ওই এলাকা দিয়ে বিমান চলাচল।

দেশে এত বড় বাড়ি ভাঙার নজির যেমন নেই, তেমনই ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে ধ্বংসের প্রযুক্তি। অত বড় বাড়ি শুধু দশ সেকেন্ডে ধুলোয় মিশে যাবে, তাই-ই নয়, ৫০০ মিটার দূরের আবাসন, ৯০০ মিটার দূরের গ্যাস পাইপলাইনের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না, ধরবে না সামান্য চিড়ও, এমনটাই দাবি নয়ডা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং ভাঙার কাজে যুক্ত মুম্বই ও দক্ষিণ আফ্রিকার কোম্পনি দুটি। টাওয়ারের কোনও অংশ দূরে গিয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে যতটুকু এলাকা জুড়ে দাঁড়িয়ে টাওয়ার দুটি, তারমধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে ধ্বংসস্তূপ।

একশো মিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, কুতুব মিনারের থেকেও উঁচু টাওয়ার দুটি মাটিতে গুঁড়িয়ে দিতে ৩৭০০ কেজি বিশেষ ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হচ্ছে। বিস্ফোরণ ঘটানো হবে রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস ব্যবহার করে। টেলিভিশনের পর্দায় গোটা দেশ এত বড় বাড়ি ভাঙার দৃশ্য লাইভ দেখার সুযোগ পাবে, যা আগে হয়নি। গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ জন্য কারিগরি প্রস্তুতি শুরু করা হয়। সাড়ে তিনশো শ্রমিক-কর্মচারী এবং জনা দশ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেমোলিশন ইঞ্জিনিয়ার ভাঙার প্রস্তুতি সেরেছেন

বিস্ফোরণে বিকট শব্দ হলেও তা থেকে বায়ু দূষণের তেমন আশঙ্কা নেই। তবে ধ্বংসস্তূপের ধুলো থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সে জন্য জিও টেক্সটাইল চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে টুইন টাওয়ার। ফলে ধুলো উড়বে কম। নয়ডা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ সরানো তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। শহরের বাইরে ছয় বিঘা জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে নিয়ে ফেলা হবে ধ্বংসস্তূপ, যার পরিমাণ হবে আনুমানিক ৫৫ হাজার টন। খরব দ্য ওয়ালের /  এনবিএস/২০২২ /একে

news