অসমে ফের বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল মাদ্রাসা, ক্ষুব্ধ জমিয়ত

 

ভারতের বিজেপিশাসিত অসমে ফের একটি বেসরকারি মাদ্রাসাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সেখানে তিনটি বেসরকারি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দেওয়া হল।

গতকাল (মঙ্গলবার) দিবাগত মধ্যরাতে মারকাজুল মা আরিফ করিয়ানা মাদ্রাসা ভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়। এখানকার ছাত্রদের মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। পরবর্তীতে সেখানে বুলডোজার দিয়ে ভাঙার কাজ শুরু হয়।

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দাবি- মাদ্রাসাটি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নির্মিত হয়নি।  বলা হচ্ছে, ভুমিকম্পের সিসমিক জোন ৫-এ থাকার কারণে যে কোনও সময় যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য এই মাদ্রাসাটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ জারি করা হয়। এটি অসমের তৃতীয় মাদ্রাসা, যা অবৈধভাবে নির্মাণের কারণে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর আগে অসমে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় সম্প্রতি দু’টি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তাদের সঙ্গে জেহাদিদের যোগ ছিল বলে জানানো হয়।  

গত (সোমবার) হাউলিতে একটি বেসরকারি মাদ্রাসা ভাঙা হয়েছে। এর সঙ্গে জেহাদিদের সংযোগ ছিল বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, এনিয়ে দু’টি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। তার মতে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো  মাদ্রাসা নয়, সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত মারকাজুল মা আরিফ করিয়ানা মাদ্রাসার সঙ্গে কোনও অসামাজিক কার্যক্রমের জড়িত থাকার খবর পুলিস অথবা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়নি।   

আজ (বুধবার) হিন্দি গণমাধ্যম জি নিউজ সূত্রে প্রকাশ, মাদ্রাসাটিতে ২২৪ জন শিশু ছিল। মধ্যরাত পর্যন্ত শিশুদের এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, এবং পরবর্তীতে এতে  বুলডোজার চালানোর কাজ শুরু হয়। বঙ্গাইগাঁও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একটি অধ্যাদেশ জারি করে বলেন, ওই মাদ্রাসাটি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নির্মিত হয়নি।   


এ সম্পর্কে আজ (বুধবার) অসম রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক এবং ‘এআইইউডিএফ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা  আব্দুল কাদির কাশেমি রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এটা একটা ত্রাস বা সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা হচ্ছে। ‘জেহাদি’র নামে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। মাদ্রাসার ঘর তৈরিতে যদি কোনও অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। মাদ্রাসার ঘর নির্মাণে লাখ লাখ মানুষের, বিধবা মহিলাদের, ফকিরদের ২ টাকা/৫ টাকা দানের টাকায় তৈরি হয়। জনগণের সম্পদ এ ভাবে ধ্বংস করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়’ বলেও মন্তব্য করেন অসম রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদির কাশেমি।খবর পার্সটুডে /এনবিএস/২০২২/একে
news