জম্মু-কাশ্মীরে অজ্ঞাত গেরিলা হামলায় কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত নিহত, কঠোর শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার এলজি’র

জম্মু-কাশ্মীরে অজ্ঞাত গেরিলা হামলায় পুরাণকৃষাণ ভট্ট নামে এক কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত নিহত হয়েছেন।

আজ (শনিবার) দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানে কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত সম্প্রদায়ের পুরাণকৃষাণ ভট্টকে গুলি করে হত্যা করেছে গেরিলারা। এ নিয়ে রাজ্যে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।  

লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেছেন, শোপিয়ানে পুরাণকৃষাণ ভট্টের উপর সন্ত্রাসী হামলা একটি কাপুরুষোচিত কাজ। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করে এক বার্তায় বলেন, আমি জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে সন্ত্রাসীদের এবং যারা তাদের সাহায্য করে এবং প্ররোচনা দেয় তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে।    

আজ কাশ্মীর পুলিশ এক বার্তায় বলেছে, ‘শোপিয়ানের চৌদারি গুণ্ড এলাকায় বাগিচায় যাচ্ছিলেন পুরাণকৃষাণ। তখন ওই সংখ্যালঘুকে নিশানা করে গুলি করে পালায় জঙ্গিরা। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি  চলছে।’ 

আজ জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি সভাপতি রবিন্দর রায়না ওই বিষয়ে বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের পিছনে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের ষড়যন্ত্র রয়েছে।  তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা এ ধরণের কাপুরুষোচিত ষড়যন্ত্র করেছে। এবং  যেভাবে কাশ্মীরি পণ্ডিত সমাজের যুবকদের নিশানা করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট যে পাকিস্তান ও পাকিস্তানি সন্ত্রাসী যাদের সেনা ও পুলিশ নির্মূল করছে তারা এ সময়ে খুব ভীত ও উদ্বিগ্ন হয়ে এ ধরণের ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চালাচ্ছে। পাকিস্তানি ও সন্ত্রাসীদের সমস্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করা হবে।  যারা কাশ্মীরি পণ্ডিত যুবকদের নিশানা করার চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করেছে তাদের সকলকেই এর হিসাব দিতে হবে।’      

চলতি বছরে গেরিলারা এ পর্যন্ত উপত্যকায় ২৪ জনেরও বেশি লোককে গুলির লক্ষ্যবস্তু করেছে। এর মধ্যে সাতজন পুলিশ, আটজন বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে ছয়জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন। গত বছরের অক্টোবর থেকে কাশ্মীরে টার্গেট কিলিং চলছে। নিহতদের অনেকেই অভিবাসী শ্রমিক বা কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত। গতবছরের অক্টোবরে পাঁচ দিনে নিহত হন সাতজন। এর মধ্যে একজন কাশ্মীরি পণ্ডিত, একজন শিখ এবং দু’জন অভিবাসী হিন্দু ছিলেন।  

গত মে মাসে একের পর এক টার্গেট কিলিং এর জেরে উপত্যকায় অস্থিরতার পরিবেশ দেখা যায়। সেজন্য কাশ্মীর উপত্যকায় কর্মরত কাশ্মীরি পণ্ডিত কর্মচারী এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু কর্মচারীরা জম্মুতে চলে যান। কাশ্মীরি পন্ডিত কর্মচারী এবং পিএম প্যাকেজের অধীনে কাজ করা সংরক্ষিত শ্রেণীর কর্মচারীরা প্রায় পাঁচ মাস ধরে জম্মুতে ধর্না-অবস্থান করছেন এবং উপত্যকার বাইরে তাদের নিয়োগ করার দাবি করছেন। আজকের হত্যার ঘটনার পর, উভয় সংগঠনই জম্মুতে প্রতিবাদ করেছে এবং ওই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। একই সঙ্গে জম্মুতে বসবাসকারী উপত্যকায় কর্মরত কর্মীদের কাশ্মীরের বাইরে নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

গত কয়েকমাসে, কাশ্মীরি পণ্ডিত এবং দেশের অন্যান্য অংশ থেকে কর্মসংস্থানের সন্ধানে কাশ্মীর উপত্যকায় আসা লোকদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত গেরিলা হামলা হয়েছে, যার মধ্যে কিছু লোক প্রাণ হারিয়েছে। তারপর থেকেই কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিতদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news