কেরলে রাজ্যপালের এবার দাবি, বরখাস্ত করা হোক অর্থমন্ত্রীকে, মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, প্রশ্নই ওঠে না


কেরলের রাজ্যপালের (Kerala Governor) সঙ্গে সিপিএম (Kerala CPM) শাসিত রাজ্য সরকারের বিরোধ নয়া মাত্রা পেল। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান আজ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে (Pinarayi Vijayan) চিঠি লিখে অর্থমন্ত্রী কেএন বালাগোপালকে একপ্রকার বরখাস্ত করার নিদান দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বালাগোপাল মন্ত্রী শপথের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেছেন। তিনি রাজ্যপালের অবমাননা করেছেন। রাজ্যপাল হিসাবে তাঁর উপর তাঁর আস্থা ও সন্তুষ্টি তিনি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যপালের এই কথার অর্থ অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে মুখ্যমন্ত্রীকে সুপারিশ করেছেন তিনি। কালক্ষেপ না করে আজই রাজ্যপালে জবাবি চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি এমন কোনও কাজ করেননি যে কারণে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া দরকার।

তবে আরিফের দাবি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, রাজ্যপালের কি কোনও মন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করার ক্ষমতা আছে। পিনারাইয়ের বক্তব্য, মন্ত্রীকে বরখাস্ত বা পদত্যাগ করতে বলতে পারেন শুধু মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের এই ব্যাপারে নাক গলানোর সুযোগ নেই। 
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে রাজ্যপাল তাঁর প্রেস সচিব মারফৎ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মন্ত্রীরা তাঁর অবমাননা বন্ধ না করলে তিনি তাঁদের প্রতি আস্থা ও সন্তুষ্টি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হবেন। রাজভবনের ওই বক্তব্যকে মন্ত্রীদের বরখাস্তের হুঁশিয়ারি বলে পাল্টা আক্রমণ শানায় সিপিএম এবং রাজ্য সরকার। সিপিএমের পলিটব্যুরো রাজ্যপাল আরিফকে সংযত হতে পরামর্শ দিতে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করে।

এই দফায় বিতর্কের সূত্রপাত, কেরলের বিশ্ব বিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে আচার্যের ক্ষমতা খর্ব করার সরকারি উদ্যোগ ঘিরে। আচার্য-রাজ্যপালের অফিস থেকে উপাচার্যদের উদ্দেশে লাগাতার নির্দেশ জারি নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী বালাগোপাল মন্তব্য করেন, কেরলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মযার্দা উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা কোনও ব্যক্তির পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়, যে রাজ্যে উপাচার্যদের কিনা নিরাপত্তা রক্ষী পরিবৃত হয়ে চলাফেরা করতে হয়।

রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। অর্থমন্ত্রী তাঁকে উদ্দেশ্য করেই ওই মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন রাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য, ওই মন্তব্যে শুধু রাজ্যপালের অবমাননা করা হয়নি, এটা দেশের ঐক্য সংহতিরও পরিপন্থী। অর্থমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের জন্যই তাঁকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন রাজ্যপাল। পত্রপাঠ সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই।


/


খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে

news