জনসংখ্যা নিয়ত্রণের দাবিতে জোরালো যুক্তি মামলাকারীর, আরজি শুনলই না সুপ্রিম কোর্ট

 দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব সরকারের। এই মর্মে কোনও পদক্ষেপ করা বা আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া আদালতের কাজ নয়। এই বিষয়ে নাক গলাবে না কোর্ট। শুক্রবার, এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন মামলাকারীর কোনও যুক্তি ধোপে টেকেনি শীর্ষ আদালতে।

এদিন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় ও অন্যান্যদের একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়নের দাবিতে করা হয়েছিল এই মামলা। মামলাকারীদের দাবি, দেশে জন বিস্ফোরণ ঘটছে। বিশ্বের ২০ শতাংশ মানুষ ভারতীয়, কিন্তু জমি মাত্র ২ শতাংশ। তাই অনিয়ন্ত্রিত জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে লাগাম টানতে দুই সন্তান নীতি প্রণয়ন করা হোক। এই মর্মে আইন আনতে কেন্দ্রীয় সরকার ও আইন কমিশনকে নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত। বেশ কিছুক্ষণ চলা সওয়াল জবাবের পর অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দাবি খারিজ করে দেয় বিচারপতি এস কে কউল ও এ এস অকা-র বেঞ্চ।

এদিন মামলাকারীর উদ্দেশে বিচারপতি কউল বলেন, “একদিন আচমকা জনসংখ্যা বৃদ্ধি থেমে যাবে, এমনটা হতে পারে না। তাহলে কীভাবে আইন কমিশনকে এমন নির্দেশ দেওয়া যায়।” বিচারপতিরা কটাক্ষ করে বলেন, “এবার কি এসব বিষয়ে আদালতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে? এহেন তর্কের পক্ষে ন্যূনতম যুক্তি থাক উচিত। আইন প্রণয়ন করা সরকারের কাজ। আমাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।”

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়নের দাবিতে দিল্লি হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেখানে দাবি করা হয়, জনসংখ্যার নিরিখে চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। দেশের ২০ শতাংশ মানুষের আধার কার্ড নেই। তাই সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। জন বিস্ফোরণই দুর্নীতির কারণ। তবে সেসব যুক্তিতে আমল না দিয়ে মামলা খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। আদালত সাফ জানায়, আইন প্রণয়ন করা সংসদের কাজ। এটা আদালতের কাজ নয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন অশ্বিনী উপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়েছিল, বলপূর্বক নাগরিকদের পরিকল্পনায় হস্তক্ষেপের বিষয়ে কখনওই মান্যতা দেয় না ভারত সরকার। এর ফলে একাধারে যেমন সামাজিক অস্থিরতা তৈরির সম্ভাবনাও রয়েছে, তেমনই জন্মনিয়ন্ত্রণে সরকারি ফতোয়া চাপালে হিতে বিপরীত হতে পারে। এদিন সেই বিষয়টিও উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত।
সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে

news