'লাভ জিহাদ' আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি, দু’সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে আদালত 

ভারতের উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে কথিত 'লাভ জিহাদ'  আইনের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানিতে আদালত দু’সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত পক্ষের কাছে লিখিত জবাব চেয়েছে। 

আজ (সোমবার) ওই ইস্যুতে আদালতে শুনানি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট দু’সপ্তাহের মধ্যে লিখিত নোটের মাধ্যমে পক্ষগুলোর কাছে তথ্য চেয়েছে যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে হাইকোর্টে শুনানির অবস্থা কী? এ সংক্রান্ত কতটি আবেদন হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে? প্রধান বিচারপতি বলেন, এ সংক্রান্ত নোট পাওয়ার পরে আদালত পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে যে বিভিন্ন হাইকোর্টকে আবেদনের শুনানির অনুমতি দেওয়া উচিত নাকি সমস্ত পিটিশন একটি হাইকোর্টে স্থানান্তর করা উচিত। নাকি সুপ্রিম কোর্টেরই শুনানি করা উচিত।   

শুনানির সময়ে বিশিষ্ট সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদের সংগঠন ‘সিজেপি’র পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট সিইউ সিং উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশের আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আইনজীবী সিইউ সিং বলেন, একজনের জীবনসঙ্গী বা বন্ধু বেছে নেওয়া একটি মৌলিক অধিকার। কেউ তা আটকাতে পারে না। বিয়ের উদ্দেশ্যকেই অপরাধ করা হয়েছে। জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা কীভাবে অপরাধ হতে পারে? এটা একটা অধিকার। প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞেস করেন, আপনি এই আইনের বিধান চ্যালেঞ্জ করেছেন? আইনজীবী সিইউ সিং বলেন, আমরা ওই অসাংবিধানিক ও স্বেচ্ছাচারী বিধানের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে আদালতে এসেছি।

হাইকোর্টেও এসব মামলা বিচারাধীন আছে কী না, তা জানতে চেয়েছে আদালত। এ বিষয়ে আইনজীবীরা বলেন, কিছু জায়গায় আছে। সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেন, গুজরাট, মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশসহ রাজ্যগুলোর আইনে একটি মৌলিক ত্রুটি রয়েছে। সেই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ করা উচিত এবং সমস্ত আবেদনের শুনানি করা উচিত।  

প্রসঙ্গত, উগ্রহিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন ‘লাভ জিহাদ’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার  করে। তাদের দাবি, মুসলিম তরুণরা হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে কৌশলে ধর্মান্তর করায়। কিন্তু এর আগে সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাই ‘লাভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। আইনেও ‘লাভ জিহাদ’-এর অস্তিত্ব নেই। বিশ্লেষকদের মতে, কথিত 'লাভ জিহাদ' হ'ল- একটি ‘কল্পিত শব্দ’ যা ডানপন্থী শক্তি দ্বারা হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মেরুকরণের জন্য উদ্ভাবন করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও রাজ্যের মেশিনারি এ ধরণের কোনও প্রমাণ খুঁজে পায়নি যার ফলে এটা প্রমাণ হয় যে কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বলে কিছু আছে।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে

news