আমাদের পরিবারের সদস্য ছিলেন ফুটবল সম্রাট

সেদিনই এক সাংবাদিক দাদার সঙ্গে মোহনবাগান ও কসমস ঐতিহাসিক ম্যাচ নিয়ে কথা হচ্ছিল। সেই অভিজ্ঞ সাংবাদিকই বললেন, ইডেনের সেই ম্যাচ নিয়ে কেউ লিখতে বললে আমি তিনটি বিষয়ে আলোকপাত করব। এক , পেলে (Pele), দুই মোহনবাগান (Mohun Bagan) ও শেষটি শিবাজি বন্দোপাধ্যায় (Shibaji Banerjee)।
আমি সত্যিই লজ্জায় পড়ে গেলাম। কেননা এমন একটি ম্যাচে আমার বাবা শিবাজিকে এখনও মানুষ মনে রাখবেন, আমি একদমই ভাবতে পারি না। নিজের বাবার নামে কিছু বলা মানে নিজের মধ্যে একটা গর্ব বোধ আসে, তৃপ্তি হয় মনের ভেতর।
পেলে আমাদের জীবনের সঙ্গে, বিশেষ করে বাবার জীবনের সঙ্গে এমন ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলেন যে এটা নিয়ে লিখতে গেলে আস্ত একটা বই হয়ে যাবে। 
শুধু এটুকু বলতে পারি আমাদের পরিবারে বরাবরই একটা বিদেশি ফুটবল নিয়ে একটা ভালবাসার জায়গা ছিল। আমি ছোট বেলা থেকে বাড়িতে শুনে এসেছি পুসকাস – ইউসেবিওদের নাম। শুধু যে ফুটবল নিয়েই আলোচনা হতো তাই নয় বরং গ্যারি সোবার্স, রোহন কানহাই, এঁদের নিয়েও কথা হতো।
পেলের সঙ্গে শিবাজি, সম্রাটের বাহুবন্ধনে কিংবদন্তি গোলরক্ষক।
সেই ভালবাসার সূত্রপাত। আমি যেমন জন্মের পরই দেখেছি বেড রুমে মুকুট পরা এক ভদ্রলোকের সঙ্গে বাবার ছবি। আমি শুধু ভাবতাম, এই লোকটা তো আমাদের পরিবারের কেউ নন, তা হলে ইনি কে! বেড রুম ছাড়াও বসার ঘরেতেও ওনার ছবি ছিল। পরে বুঝেছি বাবার জীবনের সঙ্গে পেলে নামটি জুড়ে গিয়েছিল বরাবরের মতোই।
মরুশহরেও কি মেসি ঝড়? রোনাল্ডোর পর রাজপুত্রের আসা নিয়ে জল্পনা 
আসলে কসমস ও মোহন বাগান ম্যাচে বাবার পেলের বানানা ফ্রিকিক বাঁচানো সব দিক থেকে ঐতিহাসিক হয়ে রয়েছে। এমনকি খেলায় দেখা গিয়েছিল ওয়ান ইস্টু ওয়ান আগুয়ান পেলের শট বাঁচিয়ে দেন। এই সেভ গুলোই বাবাকে অমর করে রাখবে। ওই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হলে ওই সেভগুলির কথা আসবেই, আসবে।

বাবা অবশ্য খাবার টেবিলে আলোচনার সময় বলতেন যে পেলে ম্যাচটাই তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। কিন্তু আমার মতে বাবার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট এরিয়ান গিয়ে লিগের সেরা গোলরক্ষক হওয়া। সেবার এরিয়ানে গিয়ে দারুণ কিপিং করার জন্যই মোহনবাগান বাবাকে অফার দিয়েছিল। তাই সেই ম্যাচে খেলতে পেরেছিলেন বাবা। সেই কারণেই ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন তিনি।


খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২৩/একে

news