ক্ষমা না চাইলে মতুয়ারা ভোট বাক্সে তার জবাব দেবে'


ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা না চাইলে মতুয়ারা ভোট বাক্সে তার জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাংশের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর।

শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ- মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি মালদহে এক  সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময়ে মতুয়াদের আরাধ্য দেবতা হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নাম ভুল উচ্চারণ করেছেন। শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ- তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করে মতুয়াদের আঘাত দিয়েছেন। গতকাল (বুধবার) রাতে শান্তনু ঠাকুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ইস্যুতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


একইভাবে আজ (বৃহস্পতিবার) মতুয়া মহাসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক  সুখেন্দ্র নাথ গায়েন এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ইস্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতাকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার কথা বলেছেন।   

মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাংশের সঙ্ঘাধিপতি ও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন,  ‘মালদহের একটি সভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মতুয়া ধর্ম সম্পর্কে এবং ঠাকুরবাড়ি সম্পর্কে বহু কথা  বলেছেন। সারা পৃথিবীতে ১০ কোটি মতুয়া এবং সারা ভারতবর্ষে প্রায় তিন/চার কোটি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। যাদের আরাধ্য দেবতা শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও  শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর। উনি মঞ্চে শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে যে কলেজের কথা বলতে চেয়েছেন, আমি জানি না উনি ইচ্ছাকৃতভাবে উল্লেখ করতে চেয়েছেন কী না। যে নাম উনি উচ্চারণ করেছেন, ‘রঘুচাঁদ-গরুচাঁদ’! উনি  পিছনে সেটা রিপিট করলেন যে নাম ঠিক আছে কী না। এবং সেই নামই উনি  ঘোষণা করলেন। আমার মনে হয় শুধু তপসিলি সম্প্রদায়ের ভগবান হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুর বলে উনি এভাবে অবমাননা করেছেন। উনি মতুয়া সম্প্রদায়কে উনার বিজনেস ভাবেন। উনি মতুয়া সম্প্রদায়কে শুধু ভোটব্যাঙ্কের বাক্স হিসেবে ভাবেন। এছাড়া উনি কিছু ভাবেন না।’      

ক্ষুব্ধ শান্তুনু ঠাকুর বলেন, ‘উনি নিশ্চিতকরণ করার পরেও বলেছেন রঘু চাঁদ-গুরু চাঁদ! উনার মনে হচ্ছে শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরকে কী ‘গরুচাঁদ’ মনে হয় উনার?  উনি আপার কাস্টের মানুষ তাই? উনি আপার কাস্টের মানুষ বলে আজকে তপসিলি সম্প্রদায়ের ভগবানকে এভাবে  অপমান করতে পারেন না। 

তিনি আরও বলেন, এটা সমগ্র মতুয়া সমাজ এবং আমাদের আরাধ্য দেবতাকে অপমান করা হয়। উনি যতক্ষণ না পর্যন্ত মতুয়া সমাজের কাছে ক্ষমা চাইবেন, উনার এই ইচ্ছাকৃত ব্যঙ্গাত্মক শব্দের জন্য যতক্ষণ না পর্যন্ত ক্ষমা চাইবেন, মতুয়া সমাজ উনাকে ক্ষমা করবে না’ বলেও মন্তব্য করেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাংশের সঙ্ঘাধিপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। 

অন্যদিকে, ওই ইস্যুতে মতুয়া মহাসঙ্ঘের আরেক অংশের সঙ্ঘাধিপতি ও সাবেক এমপি মমতা ঠাকুর বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়ত মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে অপমান করার ইচ্ছা থাকলে হরি-গুরুচাঁদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হতো না। মুখ্যমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা সঠিক না। আমাদেরও বেদনা হয়েছে। বিষয়টা শুধরে নেওয়া উচিত। উনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা বলেননি বলে আমার বিশ্বাস। আমরা ‘দিদি’কে (মমতা) লিখিতভাবে জানাবো বিষয়টি শুধরে নেওয়ার জন্য’ বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এমপি ও মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাংশের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে

news