বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এক-তৃতীয়াংশই চরম মাত্রায় নোমোফোবিয়ায় আসক্ত

এমনকি এ রোগটি দিন দিন বেড়েই চলছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের উদ্যোগে মোবাইল ফোন কাছে না থাকার এই আতঙ্ক (নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া) নিয়ে এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির ৫৮৫ জন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ চালানো হয়।

জরিপ অনুযায়ী, মাঝারি মাত্রার নোমোফোবিয়ায় আসক্ত ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর ৯ দশমিক চার শতাংশ শিক্ষার্থী মৃদু আসক্ততে আছে। স্মার্টফোন-ফেসবুক আসক্তি, উদ্বিগ্নতা, বিষন্নতা এবং অনিদ্রার কারণে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ রোগটি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।

এ বিষয়ে নিবন্ধটির মুখ্য গবেষক ফিরোজ-আল-মামুন জানিয়েছেন, এ রোগটি একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। তার ভাষায়, নোমোফোবিয়া আমাদের জীবনযাত্রার মানসহ কর্মক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে এবং এটি বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সঙ্গে জড়িত। সমস্যাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রকট আকার ধারণ করেছে।

জরিপ নিয়ে করা গবেষণা প্রতিবেদনটি চলতি বছরের মার্চে হেলিয়ন জার্নালে গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলেও একই বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ পায়। তবে এবারের নিবন্ধটি আগেরটির তুলনায় কলেবরে বেশ বিস্তৃত। নিবন্ধটির গবেষকরা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের শিক্ষার্থী ফিরোজ-আল-মামুন, মোহাম্মদ এ মামুন, মুক্তারুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক তাজউদ্দিন শিকদার, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সালাউজ্জামান প্রধান, নটিংহ্যাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটির সাইকোলজি বিভাগের মার্ক ডি গ্রিফিটস এবং ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার পাবলিক হেলথ বিভাগের মোহাম্মদ মুহিত।

তারা বলছেন, স্মার্টফোনে বারবার কল বা মেসেজ চেক করার প্রবণতা, ঘুম ভাঙামাত্রই ফোনটি খুঁজে দেখা, সাক্ষাতে কথা না বলে ভার্চুয়ালি কথাবার্তায় ঝোঁক থাকা, সব জায়গায় স্মার্টফোন নিয়ে যাওয়া, এমনকী স্মার্টফোন নিয়ে টয়লেটে যাওয়া, ফোনটিকে কখনো সুইচ অফ না করা, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই স্ক্রল করে যাওয়া, ফোনটি হারানোর ভয়ে থাকা এবং দৈনিক ৩ ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করা, মোবাইলের চার্জ, ব্যালেন্স বা ডেটা শেষ হয়ে গেলে অধিকমাত্রায় উদ্বিগ্ন হওয়া, ওয়াইফাই সিগন্যালের জন্য বারবার রিফ্রেশ করা এবং মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকলে অনলাইন পরিচিতি কমে যাওয়ার ভয় ইত্যাদি নোমোফোবিয়ার লক্ষণ।

দৈনিক স্মার্টফোন ব্যবহারে সময় কমানো এবং মাদকসেবন থেকে বিরত থাকলে নোমোফোবিয়ার প্রকটতা কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন গবেষক ফিরোজ-আল-মামুন।

এনবিএস/ওডে/সি

news