ভারতের নির্বাচন কমিশন বড় একটি ঘোষণা দিল। পশ্চিমবঙ্গসহ মোট ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটার তালিকা বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দ্বিতীয় ধাপের এসআইআরের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এই রাজ্যগুলোর প্রায় সবকটিতেই আগামী ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।

এর আগে, প্রথম ধাপে শুধু বিহার রাজ্যে এই এসআইআর সম্পন্ন করা হয়েছে। সোমবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রথম ধাপ সফলভাবে শেষ হয়েছে।

কোন কোন রাজ্যে হবে এসআইআর?

নির্বাচন কমিশনের প্রধান জ্ঞানেশ কুমার জানান, দ্বিতীয় দফায় যেসব রাজ্যে এসআইআর করা হবে, সেগুলো হলো: পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পুদুচেরি, আন্দামান-নিকোবর, গোয়া, গুজরাট, তামিলনাড়ু, লাক্ষাদ্বীপ এবং কেরালা। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের অন্য两名 সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।

কেন করা হচ্ছে এই সংশোধন?

এই বিশেষ সংশোধনের প্রধান লক্ষ্যই হলো, ভোটার তালিকা থেকে বেআইনি বিদেশি অভিবাসীদের নাম চিহ্নিত করে বাদ দেওয়া। এজন্য ভোটারদের জন্মস্থান ও নাগরিকত্বের প্রমাণও খতিয়ে দেখা হবে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে আসা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা অভিবাসীদের বিষয়টি মাথায় রেখে এই কার্যক্রমকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

কখন থেকে শুরু?

দেশে ধাপে ধাপে এই কাজ চলবে। প্রথম রাজ্য বিহারে এটি ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে শেষবার এই ধরনের বিশেষ সংশোধনী হয়েছিল ২০০২ সালে।

কোন রাজ্য বাদ পড়ল?

আগামী বছর যেসব রাজ্যে নির্বাচন হবে, তার মধ্যে আসামে আপাতত এই সংশোধন করা হবে না। নির্বাচন কমিশনের দাবি, আসামে এনআরসির কাজ প্রায় শেষের দিকে, তাই সেটি শেষ হবার পরই সেখানে এসআইআর শুরু হবে।

বিহারে কী ফলাফল?

বিহারে এই প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত তালিকায় ৭ কোটি ৪২ লাখ নাম রয়েছে। উল্লেখ্য, এই সংশোধনের পর বিহারের ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লাখ নাম বাদ পড়ে গিয়েছিল।

বিরোধিতা করছে কারা?

বিজেপি বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই এসআইআরের বিরোধিতা করে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস, বিহারের আরজেডি, উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি থেকে শুরু করে তামিলনাড়ুর ডিএমকে—সবকটিই এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছে। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন বিজেপি দলটি নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে বিরোধী দলগুলোর ভোটারদের টার্গেট করছে। এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তবে নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে, বিহারে এসআইআর-এর বিরুদ্ধে তাদের কাছে কোনো প্রকার লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।

 

news