ভারতের কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু শহরে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। গাড়ির সঙ্গে সামান্য স্কুটারের ধাক্কায় গাড়ির গ্লাস ভেঙে যাওয়ায় এক খাবার ডেলিভারি করা যুবককে তাড়া করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। গত ২৫ অক্টোবর রাতে বেঙ্গালুরু শহরের নাটরাজা লেআউটে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত দম্পতি হলেন—কেরালার বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী মনোজ কুমার, যিনি একজন মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক, এবং তার স্ত্রী জম্মু ও কাশ্মীরের ৩০ বছর বয়সী আরতি শর্মা।
নিহত যুবকটির নাম দর্শন। তিনি কেমবাট্টালির বাসিন্দা ছিলেন এবং অবিবাহিত।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২৫ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে দর্শন তার স্কুটারে খাবার ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিলেন। তাড়াহুড়োর সময় অসাবধানতাবশত তার স্কুটারের ধাক্কা লেগে মনোজের গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। দর্শন সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমা চেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। কিন্তু এতে মনোজ অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এরপর মনোজ গাড়ি নিয়ে দর্শনের পিছু নেন এবং কিছু দূর গিয়ে তার স্কুটারটি দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে এসে পেছন থেকে সজোরে দর্শনের স্কুটারটিকে ধাক্কা মারেন। দর্শনের সঙ্গে তার বন্ধু বরুণও সেই সময় স্কুটারে ছিলেন।
আহত দুই তরুণকে স্থানীয় লোকজন দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানান, দর্শনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। পরে দর্শনের বোন অজ্ঞাত এক গাড়িচালকের বিরুদ্ধে জে পি নগর ট্রাফিক থানায় ‘হিট-অ্যান্ড-রান’ (দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া) মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ এরপর সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে পায়, গাড়িচালক ইচ্ছাকৃতভাবে স্কুটারটিকে ধাক্কা দিয়েছেন। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, গাড়িটি হঠাৎ বাঁ দিকে ঘুরে এসে দর্শনের স্কুটারকে ধাক্কা মারে এবং তারপর দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তী সিসিটিভি ফুটেজে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। দেখা যায়, রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে অভিযুক্ত দম্পতি পুনরায় ঘটনাস্থলে ফিরে আসে। মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় তারা গাড়ির ভেঙে যাওয়া অংশগুলো সংগ্রহ করতে থাকে এবং কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে।
অবশেষে পুলিশ ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে এবং বুধবার স্থানীয় আদালতে হাজির করে। আদালত অভিযুক্ত মনোজ কুমার ও আরতি শর্মাকে ১৪ দিনের বিচারিক হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
 
                                
                                 
	 
                                 
                     
 
 
 
                                                                                    
 
                                                                                                                          
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                            