মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ কোরিয়া সফর শুরুর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই আবারও 'শক্তি প্রদর্শন' করল উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, তারা তাদের পশ্চিম সমুদ্রসীমায় (পীত সাগর) বেশ কয়েকটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এই খবর দেয়। তাদের দাবি, মঙ্গলবার পীত সাগরে উৎক্ষেপণ করা এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উড়ে সঠিকভাবে লক্ষ্যভেদ করেছে।

কে তত্ত্বাবধান করলেন এই পরীক্ষা?

এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাটি সরাসরি তত্ত্বাবধান করেছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা পাক জং চোন। তিনি সাফল্যের কথা ঘোষণা করে বলেন, যুদ্ধ প্রতিরোধের জন্য উত্তর কোরিয়ার 'পারমাণবিক শক্তি' বিকাশে এটি আরও একটি 'বড় সাফল্য'।

তাঁর কথায়, "বিভিন্ন কৌশলগত আক্রমণাত্মক পদ্ধতির নির্ভরযোগ্যতা যাচাই এবং শত্রুদের সামনে আমাদের শক্তির প্রদর্শনই ছিল এই পরীক্ষার মূল লক্ষ্য। আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো আমাদের পারমাণবিক যুদ্ধ সক্ষমতাকে ক্রমাগত শক্তিশালী করে তোলা।"

দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন বাহিনীর প্রতিক্রিয়া কী?

এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ সদর দপ্তর বুধবার নিশ্চিত করেছে যে তাদের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি আগে থেকেই শনাক্ত করতে পেরেছিল। তাদের বক্তব্য, মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে উত্তর কোরিয়ার উত্তর-পশ্চিম সমুদ্রসীমা থেকে এই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়।

দক্ষিণ কোরিয়া এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিলে এই অস্ত্রগুলোর detailed analysis করছে। পাশাপাশি, উত্তর কোরিয়ার যেকোনো উসকানিমূলক কাজের বিরুদ্ধে 'কঠোর ও কার্যকরী জবাব' দিতে তাদের যৌথ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি পুরোদমে জারি রয়েছে।

গত সপ্তাহেও ছিল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেও উত্তর কোরিয়া একই ধরনের একটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল। সেবারও তারা দাবি করেছিল যে, তাদের পারমাণবিক যুদ্ধ-বিরোধী ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে তারা একটি নতুন হাইপারসনিক সিস্টেমের পরীক্ষা করেছে।

কখন হল এই পরীক্ষা?

এই সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটি হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংজু শহরে। আর ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরেই সেখানেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং-এর সাথে বৈঠক করতে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই গিয়ংজু শহরেই চলতি বছরের এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এপেক) সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। তাই, এই সময়টাতেই উত্তর কোরিয়ার এমন পরীক্ষা আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশ্লেষকদের কাছে 'বিশেষ বার্তা' হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

news