উত্তর আফগানিস্তানে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে, আর প্রায় ৩২০ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। একইসঙ্গে এই ভয়াবহ ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক মাজার-ই-শরীফ বা নীল মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 ৬.৩ মাত্রার কম্পন! আতঙ্ক চারদিকে
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে ৬.৩ মাত্রার এই শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ব্যাপক উদ্ধার অভিযান চলছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে একটি মেয়ে শিশুকে টেনে বের করা হচ্ছে। শিশুটি জীবিত থাকলেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।

মাজার-ই-শরীফের রাহিমা নামে এক নারী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "ভূমিকম্প আঘাত হানার পর আমার পরিবার ভয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। আমার মেয়ে চিৎকার করতে করতে নিচে নামে। আমার জীবনে আমি এমন শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভব করিনি। আমার বাড়ি কংক্রিটের, তাই কিছু হয়নি। কিন্তু যাদের বাড়ি মাটির, সেগুলো অক্ষত আছে কি না আমি জানি না।"

 ইতিহাসের পাতায় হযরত আলীর মাজার
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে দাবি করা হয় যে এই স্থানেই ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.)-এর কবর রয়েছে। এই দাবির ভিত্তিতেই মসজিদটি 'হযরত আলীর মাজার' বা 'নীল মসজিদ' নামে পরিচিত।

তবে, ঐতিহাসিক দলিল ও তথ্য অনুযায়ী, হযরত আলীকে (রা.) ইরাকের নাজাফে কবরস্থ করা হয়েছে। আততায়ীর তলোয়ারের আঘাতে ইরাকের কুফায় তার মৃত্যুর পর তাকে নাজাফে নিয়ে কবর দেওয়া হয়।

কিন্তু আফগানিস্তানের স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, শত্রুর হাত থেকে হযরত আলীর মরদেহকে রক্ষা করার জন্য গোপনে সেটি খোরাসানে (আফগানিস্তান) আনা হয় এবং বর্তমান মাজার-ই-শরীফ নামে পরিচিত স্থানটিতে সমাহিত করা হয়। যদিও এই দাবির পক্ষে শক্তিশালী কোনো প্রমাণ নেই।

 

news