শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, আবাসন, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও পরিচ্ছন্ন শৌচ—এই ছয়টি মৌলিক পরিষেবাকে প্রতিটি শিশুর অধিকার হিসেবে বিবেচনা করে ইউনিসেফ। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়ংকর এক তথ্য। ভারতের প্রায় ২০ কোটি ৬০ লাখ শিশু এই পরিষেবাগুলোর একটিও পাচ্ছে না।
বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত ইউনিসেফের এই রিপোর্ট বলছে, সংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের মোট শিশু জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।
যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের পোষণ অভিযান, সমগ্র শিক্ষা, মিড-ডে মিল, বেটি বাঁচাও–বেটি পড়াও, স্বচ্ছ ভারতসহ বহু প্রকল্প চালু রয়েছে; তবুও বাস্তবে এখনও বড় অংশের শিশু ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত। ফলে প্রশ্ন উঠছে—এত প্রকল্প ও হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হলেও প্রকৃত উপকার পেলো কারা?
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ শিশু অন্তত দুই বা তার বেশি মৌলিক পরিষেবা পাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের অধিকার এভাবে উপেক্ষা করা হলে ভারতের সামগ্রিক উন্নয়নও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ইউনিসেফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি সিন্থিয়া ম্যাককাফ্রে বলেন, “শিশুদের উপর বিনিয়োগের চেয়ে বড় কোনো বিনিয়োগ নেই। প্রতিটি সরকারি নীতিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোতে স্থায়ী আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক নীলাঞ্জন ঘোষও বলেন, শিশুদের উপর ধারাবাহিক বিনিয়োগই ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি।
ইউনিসেফের আহ্বান, শিশু অধিকারের গুরুত্বকে আরও বাড়াতে হবে—যেকোনো প্রকল্প বা উন্নয়ন পরিকল্পনায় শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার না দিলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না।
