জাপানের সঙ্গে চলমান বিরোধ এবার জাতিসংঘ পর্যন্ত গড়াল। তাইওয়ান ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্ক যেভাবে শীতল হচ্ছে, তা আবারও সামনে এনেছে চীন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, জাপানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে বেইজিং।
জাতিসংঘে চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং এক চিঠিতে লিখেছেন, যদি জাপান তাইওয়ান প্রণালির উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে সামরিক হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে, সেটি ‘আগ্রাসন’ হিসেবেই বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, চীন আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের অধীনে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর অবস্থান নেবে।
এই বিরোধের সূত্রপাত জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সাম্প্রতিক মন্তব্য থেকে। বহুদিন ধরে জাপান–যুক্তরাষ্ট্রের ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র নীতি অনুসরণ করা হলেও, ৭ নভেম্বর পার্লামেন্টে তাকাইচি বলেন, চীন তাইওয়ানে আক্রমণ করলে সেটি “জাপানের টিকে থাকার জন্য হুমকি” হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। জাপানি আইনে এই ঘোষণা দেওয়া হলে প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনী মোতায়েনের ক্ষমতা পান।
ফু কং চিঠিতে আরও লিখেছেন, আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক আচরণবিধির ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী; কারণ তিনি প্রকাশ্যে বলছেন—চীন তাইওয়ানে হামলা করলে জাপানও সামরিকভাবে সাড়া দিতে পারে।
বেইজিং বহুদিন ধরে গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করে এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের ইঙ্গিতও দেয়। তবে তাইওয়ান দ্বীপের সরকার স্পষ্ট বলেছে—তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে একমাত্র তাইওয়ানের জনগণ।
তাকাইচির মন্তব্যের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। বেইজিং অভিযোগ করেছে, এতে দুই দেশের বাণিজ্যিক সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং চীনে জাপানি শিল্পীদের বেশ কিছু কনসার্টও হঠাৎ বাতিল করা হয়েছে।
ফু কং তার চিঠিতে জাপানকে সতর্ক করে বলেন, ‘উসকানি’ ও ‘সীমা লঙ্ঘন’ বন্ধ করতে হবে এবং ভুল মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তার দাবি—জাপানের এসব বক্তব্য চীনের মৌলিক স্বার্থের প্রতি প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।
