দুবাই এয়ারশোতে ভারতের তেজস যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা এখন বড় ধরনের প্রশ্ন তুলেছে। এই দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা এবং খরচ নিয়ে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই যুদ্ধবিমান প্রকল্প নিয়ে।

হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হাল) এবং অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই উন্নত তেজস যুদ্ধবিমান 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রতিরক্ষা কর্মসূচির একটি প্রধান প্রকল্প হিসেবে পরিচিত।

২০২১ সালের একটি চুক্তি অনুযায়ী, ভারত ৮৩টি তেজস এমকে-১এ যুদ্ধবিমান কিনতে মোট প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। এই হিসাবে প্রতিটি বিমানের দাম দাঁড়ায় প্রায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার। ট্রেইনার ভ্যারিয়েন্টের দাম ছিল একটু কম—প্রতি বিমান প্রায় ৩৯ মিলিয়ন ডলার।

কিন্তু নতুন অর্ডারের সাথে সাথে খরচ বেড়েছে অনেকটা। ২০২৫ সালে তেজস এমকে-১এ-এর আরও ৯৭টি বিমান কেনার জন্য ভারতের সর্বশেষ চুক্তির মূল্য ৭.৮ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রতিটি বিমানের সম্ভাব্য দাম প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা মূল্যস্ফীতি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে বলছে কর্তৃপক্ষ।

রপ্তানির ক্ষেত্রেও তেজসকে জোরেশোরে বাজারজাত করছে হাল। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেজসের প্রতিটির সম্ভাব্য রপ্তানি মূল্য প্রায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার হতে পারে। কিন্তু দুবাইয়ের মতো আলোচিত আন্তর্জাতিক এয়ারশোতে এই দুর্ঘটনার পর বিদেশি ক্রেতাদের আগ্রহ কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

একসময় সাশ্রয়ী মূল্যের দেশীয় যুদ্ধবিমান হিসেবে পরিচিত তেজস প্রকল্প এখন নিরাপত্তা এবং ব্যয়—দুই দিক থেকেই কঠোর নজরদারির মুখে। ভারতের বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন এবং প্রতিরক্ষা রপ্তানির লক্ষ্য পূরণ করতে হলে এইসব প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

news